বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সিওপিডি: দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট

অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন

সিওপিডি: দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট

 সিওপিডি একটি শ্বাসকষ্ট-জনিত রোগ যা বিশ্বব্যাপী দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা সৃষ্টি করে এবং মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। বহুলোক এই রোগে ভোগে এবং কম বয়সে এই রোগে অথবা এই রোগের জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে সিওপিডি বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম কারণ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে ২০১২ সাল নাগাদ সিওপিডি বিশ্বব্যাপী রোগের বিস্তৃতি হিসেবে পঞ্চম এবং মৃত্যুর কারণ হিসেবে তৃতীয় স্থান দখল করবে, তাছাড়া অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষতির কারণ হিসেবেও সিওপিডি উল্লেখযোগ্য। সিওপিডি রোগ আমাদের দেশের জন্যও একটি অন্যতম স্বাস্থ্য সমস্যা। চিকিৎসক এবং রোগী উভয়ের জন্য এটা চ্যালেঞ্জিং বিষয় এবং কখনো হতাশাজনকও বটে। কারণ বেশিরভাগ রোগী প্রাথমিক পর্যায়ে আসেন না এবং রোগের উপশমের পর চিকিৎসকের উপদেশ মেনে চলেন না। বাংলাদেশে এই রোগের প্রকোপ সঠিক জানা না গেলেও গবেষণায় দেখা যায় এটা প্রায় ৬%।

সিওপিডি কি : সিওপিডি হলো ফুসফুসের এমন একটি রোগ যেখানে শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে রোগী শ্বাসকষ্টে ভোগে। এই শ্বাসকষ্ট দিন দিন বৃদ্ধি পায় যা আর কখনো সম্পূর্ণভাবে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে না।

কাদের সিওপিডি রোগ বেশি হয় : সিওপিডি রোগের জানা কারণগুলোর মধ্যে ধূমপান হচ্ছে প্রধানতম। সাধারণত যে যত দীর্ঘ সময় ধূমপান করবে তার সিওপিডি হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। কর্মক্ষেত্রে জৈব-অজৈব ধূলিকণা বেশি হলে, রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে যারা কাঠ, শুকনো খড় ইত্যাদি ব্যবহার করেন, বায়ু দূষণ বেশি হলে, -ফুসফুসের সংক্রমণ হলে, যেমন ঘন ঘন ভাইরাস সংক্রমণ, যাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা নিম্ন এবং যারা অপুষ্টিতে ভুগছে। সাধারণত নারীদের তুলনায় পুরুষরাই বেশি সিওপিডি আক্রান্ত হয়। তাছাড়া জন্মগতভাবে ফুসফুস ঠিকমত গড়ে না উঠলে এবং আলফা ওয়ান এনটি ট্রিপসিন নামক এনজাইমের ঘাটতি হলেও সিওপিডি হয়।

রোগের লক্ষণ : শ্বাসকষ্ট ও কাশি সিওপিডি রোগের প্রধান লক্ষণ। শ্বাসকষ্ট সাধারণত কমবেশি সার্বক্ষণিক বিদ্যমান থাকে এবং চলাফেরায় বৃদ্ধি পায়। সঠিক চিকিৎসা না নিলে শ্বাসকষ্ট দিন দিন বাড়তে থাকে। কাশির সঙ্গে কফ থাকতে পারে এবং কোনো কোনো সময় শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং কফের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে ধূমপানের ইতিহাস থাকে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে মাটির চুলায় রান্নার ইতিহাস পাওয়া যায়।

চিকিৎসা : রোগের তীব্রতা নির্ণয় এবং পর্যবেক্ষণ,  কারণসমূহ নির্ণয় এবং সম্ভব হলে কারণসমূহ দূর করা, সঠিক ওষুধ প্রয়োগ এবং রোগীদের সঠিক পুনর্বাসন।

লেখক : অ্যাজমা ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ,

মেডিনোভা মালিবাগ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর