বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

শীতে থাকুন সুস্থ ও উষ্ণ

শীতে থাকুন সুস্থ ও উষ্ণ

শীতের মিঠেকড়া রোদ অনেককেই টানে। কুয়াশা গায়ে মাখতেও ভালোবাসেন কেউ কেউ। উষ্ণমণ্ডলীয় দেশের জন্য শীত আশীর্বাদ হয়েই আসার কথা। বিশেষ করে বাংলাদেশে খণ্ডকালীন শীত অনেকের জন্যই আনন্দবার্তা নিয়ে আসে। ঘাম, প্যাঁচপেঁচে গরম থেকে রেহাই মেলে। ঘরের বাইরে বেরিয়ে স্বস্তি লাগে। বাহারি ও ভারী পোশাকে ঘুরে বেড়ানো যায়। কিন্তু শীতে কমতে থাকা বাতাসের আর্দ্রতা ও ধুলাবালির দাপটের কারণে অন্য দেশের শীতের তুলনায় বাংলাদেশের শীত কিছু দুঃসংবাদ শোনানোর শঙ্কা নিয়েও উপস্থিত হয়। শুষ্ক আবহাওয়া হয়ে ওঠে ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার জন্যে উপযোগী। বিশেষ বিশেষ রোগ রয়েছে যাদের, শীত তাদের জন্য বাড়তি বিড়ম্বনা ও কষ্ট নিয়ে আসে। তাই শীতের শুরুতেই যদি সতর্ক হোন তবে নিজেকে বিপদমুক্ত রাখতে পারবেন। রোগীরাও নির্দিষ্ট কিছু রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ হবেন। ফলে মনের উষ্ণতা বজায় রাখাও সম্ভব হবে। অ্যালার্জিজনিত বিড়ম্বনা ও কষ্ট নিয়ে আসা রোগগুলো হলো—

অ্যালার্জিজনিত সর্দি বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস : এর উপসর্গ হচ্ছে অনবরত হাঁচি, নাক চুলাকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কারও কারও চোখ দিয়েও পানি পড়ে ।

অ্যাজমা বা হাঁপানি: এর উপসর্গ হচ্ছে বুকের ভিতর বাশির মতো সাঁই সাঁই আওয়াজ, শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট, দম খাটো অর্থাৎ ফুসফুস ভরে দম নিতে না পারা, ঘন ঘন কাশি, বুকে আঁটসাঁট , রাতে ঘুম থেকে ওঠে বসে থাকা।

সমন্বিতভাবে এ রোগগুলোর চিকিৎসা হলো :

অ্যালার্জেন পরিহার : যখন অ্যালার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা পরিহার করে চললেই সহজ উপায়ে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ হয়।

ওষুধ প্রয়োগ : অ্যালার্জি ভেদে ওষুধ প্রয়োগ করে অ্যালার্জির উপশম অনেকটা পাওয়া যায় ।

অ্যালার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি : অ্যালার্জি দ্রব্যাদি এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও অ্যালার্জিজনিত রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি। এ পদ্ধতি ব্যবহারে কর্টিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার অনেক কমে যায়। ফলে কর্টিকোস্টেরয়েডের বহুল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ ভ্যাকসিন পদ্ধতির চিকিৎসাকে অ্যালার্জিজনিত রোগের অন্যতম চিকিৎসা বলে অভিহিত করেন । এটাই অ্যালার্জি রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি । আগে ধারণা ছিল অ্যালার্জি একবার হলে আর সারে না । কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথমদিকে ধরা পড়লে অ্যালার্জিজনিত রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব। অবহেলা করলে এবং রোগ অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই  প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নিতে হবে।

কারণ প্রথমিক অবস্থায় চিকিৎসা না নিলে পরবর্তীতে জটিলতা বাড়তে পারে। মনে রাখবেন প্রতিকার নয়, প্রতিরোধ উত্তম।

অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাশ

দি অ্যালার্জি অ্যান্ড অ্যাজমা সেন্টার স্কাইচাট রাজকোষ, পশ্চিম পান্থপথ, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর