সোমবার, ১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

গরম ও বক্ষব্যাধির সম্পর্ক

অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন

গরম ও বক্ষব্যাধির সম্পর্ক

অতিরিক্ত গরমের জন্য আমাদের শরীর ঘেমে যায়, শরীরে আবার সেই ঘাম শুকায়। গরম সহ্য করতে না পারার কারণে ঠাণ্ডা কিছু খেয়ে থাকি নিজের প্রশান্তির জন্য। এই সময় রাস্তাঘাটে ধুলাবালি, অ্যালারজেন বেড়ে যায়, নতুন নতুন ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। উপরোক্ত কারণগুলোর জন্য আমরা নানা ধরনের বক্ষব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে থাকি। বিভিন্ন ভাইরাস শ্বাস নেওয়ার সময় যখন শ্বাসনালিতে ঢুকে যায় তখন সেই ভাইরাস দ্বারা আমরা আক্রান্ত হয়ে থাকি এবং নানা ধরনের বক্ষব্যাধিতে আক্রান্ত হই। আবার হঠাৎ করে গরম আবহাওয়া থেকে গিয়ে ঠাণ্ডা কিছু খাওয়ার ফলে পবষষ রহলঁৎু হয় সেখানে কোষ প্রদাহ (cellular inflammation) হয়ে, ইনফেকশন হয়।

১. আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন। যেমন— * সাইনুসাইটিস * ফ্যারিনজাইটিস * ল্যারিনজাইটিস * ব্রঙ্কাইটিস * নিউমোনিয়া ইত্যাদি। ২. ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা। ৩. সিওপিডি (ক) সাইনুসাইটিস রোগের উপসর্গসমূহ হলো— জ্বর, সর্দি, চোয়ালের একপাশে অথবা দুই পাশে ব্যথা, মাথা ব্যথা, চোখ দিয়ে পানি পড়া। (খ) ল্যারিনজাইটিস রোগের উপসর্গসমূহ হলো— গলা ব্যথা, শুকনা কাশি, স্বরের পরিবর্তন হওয়া, জ্বর এমনকি গলা বসে যাওয়া। (গ) নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণসমূহ হলো— জ্বর, শ্বাসকষ্ট, দ্রুত শ্বাস, বুকের পাঁজরে ব্যথা, নাড়ির গতি বেড়ে যাওয়া, দুর্গন্ধযুক্ত থুতু বের হওয়া, হলুদ রঙের কাশি, বুকে ব্যথা ইত্যাদি। (ঘ) ব্রঙ্কাইটিস রোগের লক্ষণসমূহ হলো— প্রথমে সাদা রঙের কাশি বের হওয়া, পরে হলুদ রঙের কাশি বের হওয়া, জ্বর, বুকে অস্বস্তি, বুকে ব্যথা ইত্যাদি।

সিওপিডি : যারা এই রোগে পূর্ব থেকেই আক্রান্ত তাদের সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে এবং এই গরমের সময় অতিরিক্ত নতুন ভাইরাসের আবির্ভাব হওয়ার কারণে তারা সহজেই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। উপসর্গসমূহ যেমন— শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ চাপ ভাব, বুকে ব্যথা, কাশি ইত্যাদি বেড়ে যায়। ফুসফুসের ভেতর অক্সিজেন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে।

ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা : যারা অ্যাজমায় পূর্ব থেকেই আক্রান্ত, শ্বাস নেওয়ার সময় এ্যালারজেন, ধুলাবালি শ্বাসনালীতে ঢুকে, তখন এই রোগটি বেড়ে যায়। আবার অতিরিক্ত ঘামের কারণে Dehydration হয়, শ্বাসনারীর Mucous layer (মিউকাস লেয়ার) ডিহাইড্রেটেড (dehydrated) হয়ে যায় এবং শ্বাসনালীতে irritation হয়। ফলে অ্যাজমা রোগটি দেখা দেয়। অ্যাজমা রোগের লক্ষণসমূহ হলো—কাশি, কাশতে কাশতে বুকে ব্যথা হওয়া, শ্বাসকষ্ট, বাঁশির মতো আওয়াজ শুনতে পাওয়া ইত্যাদি।

প্রতিরোধ : উপরোক্ত রোগসমূহ থেকে আমাদের রক্ষা করতে হলে কিছু দিকনির্দেশনা মেনে চলতে হবে। যেমন—১. ধুলাবালি, অ্যালার্জি জাতীয় কোনো জীবাণু যাতে নাক দিয়ে অথবা শ্বাস নেওয়ার সময় শ্বাসনালীতে না ঢুকতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এটার জন্য মুখে সধংশ ব্যবহার করা যেতে পারে। ২.ঘাম যাতে শরীরে না শুকায় ঠাণ্ডা যাতে না লাগে সে জন্য ঘাম সঙ্গে সঙ্গে মুছে ফেলতে হবে।

লেখক : প্রধান উপদেষ্টা, ওয়েস্টিন মেডিকেল

সেন্টার, কুড়িল চৌরাস্তা, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর