শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোগের উপসর্গ ‘হুইজিং’

অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন

রোগের উপসর্গ ‘হুইজিং’

বুকের ভিতর থেকে বাঁশির মতো শব্দ বের হলে তাকে Wheezing (হুইজিং) বলা হয়। ফুসফুসের বিভিন্ন ধরনের উপসর্গের মধ্যে হুইজিং একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ। ফুসফুসের কয়েকটি রোগের মধ্যে এই উপসর্গটি প্রতীয়মান হয়। বেশিরভাগ সময় বুকের ভিতরে বাঁশির মতো শব্দ হলে সাধারণত ভাবা হয় হাঁপানি (অ্যাজমা) হয়েছে। অন্যান্য কারণেও বুকের মধ্য থেকে বাঁশির মতো শব্দ হতে পারে। তবে এই সময়টাতে এ ধরনের উপসর্গ বেশি পরিলক্ষিত হয়। তাই প্রাথমিক অবস্থা থেকে চিকিৎসা নেওয়া উত্তম। অন্যথায় হাঁপানি বা অ্যাজমা বেড়ে গিয়ে তা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এ কারণে লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ পাওয়া মাত্রই স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হতে হবে। নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।

কারণসমূহ : হাঁপানি, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কিওলাইটিস, হুপিং কফ কোনো Foreign body শ্বাসনালিতে প্রবেশ করলে, Post Nasal Drip (আমাদের নাকের পেছনের দিক থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়লে)

উপসর্গ : গলা দিয়ে বাঁশির মতো শব্দের সঙ্গে সঙ্গে কাশি (শুকনো কাশি, রাতে বেশি) শ্বাসকষ্টের সঙ্গে  অ্যালার্জি ও অ্যাকজিমার ইতিহাস থাকলে ধারণা করা হয় যে হাঁপানি (অ্যাজমা) হয়েছে। ♦ সাধারণত শিশুদের যাদের বয়স ২ থেকে ৫ মাসের মধ্যে এবং ওই সময়ে যদি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এর সঙ্গে কাশি, অল্প অল্প জ্বর, স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, শ্বাসকষ্ট, গলা দিয়ে শোঁ শোঁ শব্দ হয় তাহলে সন্দেহ করা হয় ব্রঙ্কিওলাইটিস (Bronchiolitis) হয়েছে। ♦ শিশুদের সাধারণত ৬ মাস থেকে ৪ বছর বয়সে হঠাৎ করে কাশি, শ্বাসকষ্ট, শ্বাস নেওয়ার সময় গলা দিয়ে বাঁশির মতো শব্দ হলে এবং তখন ছোট Foreign body (যেমন : পয়সা, মটরদানা, খেলনার ছোট অংশ) খেলার সময় শ্বাসনালিতে ঢুকে গেলে Foreign body সন্দেহ করা হয়। ♦ সাধারণত ১ থেকে ২ বছর বয়সের শিশুদের সব সময় যদি গলা থেকে বাঁশির মতো শব্দ, অন্য কোনো ফুসফুসজনিত কোনো উপসর্গ নেই, স্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি কিন্তু  Bronchodilator এ কোনো উন্নতি না হলে বুঝতে হবে Happy Wheezer হয়েছে।  কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে বাঁশির মতো শব্দ হওয়া, শোবার সময় বা কান্নার সঙ্গে শব্দ বেড়ে যাওয়া এবং যদি বাচ্চার বয়স ১-২ বছরের মধ্যে হয়, তাহলে বুঝতে হবে Laryngo-tracheomalacia হয়েছে। তাই আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়টাতে স্বাস্থ্যের প্রতি আরও বেশি যত্নবান হতে হবে। প্রাথমিক অবস্থা থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, এসব ক্ষেত্রে প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

লেখক : অ্যাজমা ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ,

মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর