ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের প্যানিক ডিজঅর্ডার রোগটি বেশি হয়। রোগটি সব বয়সেই হতে পারে। তবে ১৫-২৫ এবং ৪৫-৫৫ বয়সে বেশি হয়। বিপত্নীক বিধবা, স্বামী-স্ত্রী দু’জনে আলাদা হয়ে যাওয়া— এ ধরনের পারিবারিক পরিস্থিতিতে বেশি দেখা দেয়। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারানো এবং বড় ধরনের মানসিক আঘাত পাওয়া— এদের মধ্যে প্যানিক ডিজঅর্ডার রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
রোগীদের ভাবনা : তার হার্টের অসুখ। এজন্য বার বার ইসিজি ও ইকোকার্ডিওগ্রাম করে বেড়াচ্ছে। মাথা ঝিমঝিম করছে। মানে স্ট্রোক করে ফেলবে।
লক্ষণ : হঠাৎ করে বুক ধড়পড় করা, শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা। দম বন্ধ হয়ে আসা, বড় বড় করে হাঁপানি রোগীর মতো শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া। হাত-পা অবশ হয়ে আসা। শরীরে কাঁপুনি হওয়া। বুকের মধ্যে চাপ লাগা এবং ব্যথা অনুভব করা। এমনও দেখা গেছে, কোনো কোনো রোগী বলে হঠাৎ পেটের মধ্যে একটা মোচড় দেয়। তারপর উপর দিকে ওঠে বুক ধড়ফড় শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে হাত-পা অবশ হয়ে যায়। আর কথা বলতে পারে না। বমি বমি ভাব লাগে। পেটের মধ্যে অস্বস্তিবোধ লাগা ও গলা শুকিয়ে আসা। পেটের মধ্যে শুধু গ্যাস ওঠে এবং বুকে চাপ দেয়। দুশ্চিন্তা থেকেও মাথা ব্যথা হতে পারে। কোনো কোনো রোগী বুকে ব্যথা ও হাত-পায়ের ঝিমঝিমকে হার্টঅ্যাটাকের লক্ষণ মনে করে প্রায়ই ছুটে যান হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ডাক্তার দেখাতে। মৃত্যু ভয় দেখা দেওয়া, মনে হয় মরে যাবেন রোগ যন্ত্রণায়। নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা।পরিণতি : চিকিৎসা না করলে এ ধরনের রোগী ডাক্তারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে সর্বস্বান্ত হয় এবং সব শেষে বিষণ্নতায় ভুগতে পারে। এক সময় হতাশ হয়ে পড়েন। এগোরেফোবিয়া নামক আরও একটি সমস্যার উদ্ভব হতে পারে। তখন রোগীরা বাইরে বের হতে, হাটবাজার, রেস্টুরেন্ট, ক্যান্টিন, পার্ক, খোলা জায়গা ইত্যাদি জায়গায় যেতেও ভয় পায়।
ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন
আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।