শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

থাইরয়েড থেকেও জটিল রোগ

থাইরয়েড থেকেও জটিল রোগ

একটু কাজ করতে গেলে হাঁপিয়ে উঠছেন, বুক ধড়ফড় করছে, শরীরে পানি জমে হাত-পা-মুখ ফুলে গেছে, শরীর ভার ভার লাগে, কাজকর্মে মন বসে না ইত্যাদি হৃদরোগের অন্যতম লক্ষণ।

ক্ষুধামন্দা, বদহজম, বারবার টয়লেটে যাওয়ার প্রবণতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম ইত্যাদি পরিপাকতন্ত্রের অসুস্থতার লক্ষণ।

মেজাজ খিটমিটে থাকা, খুব সহজে রাগান্বিত হওয়া, মাথা হালকা বোধ হওয়া, মাথা ঘোরানো বা মাথাব্যথা, সব কিছুকে স্নায়ু রোগের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শারীরিক দুর্বলতা, শারীরিক অক্ষমতা, শক্তি প্রয়োগের কাজ করতে অপারগতা ইত্যাদি হলো শারীরিক কাঠামোগত অসুস্থতার লক্ষণ। বারবার প্রস্রাবের বেগ হওয়া,  প্রস্রাব করার পরও পেটে প্রস্রাব জমা থাকার মতো ভাব হওয়া ইত্যাদি মূত্ররোগের লক্ষণ। চর্ম রোগের লক্ষণ হিসেবে চামড়া পাতলা হয়ে যাওয়া, খসখসে হয়ে যাওয়া, পশম ঝরে পড়া, চামড়ায় দাগ পড়া, চুলকানি হওয়া লক্ষ করা যায়। স্ত্রীরোগের লক্ষণ যেমন, ঋতুস্রাবের সমস্যা, পিরিয়ডের সময় অত্যধিক ব্যথা অনুভূত হওয়া, অত্যধিক পরিমাণে রক্তস্রাব হওয়া, বন্ধ্যত্ব দেখা দেওয়া। উল্লেখিত লক্ষণসমূহ যদিও বিভিন্ন শারীরিক সিস্টেমের (তন্ত্রের) সমস্যা কিন্তু একটি মাত্র কারণে কোনো ব্যক্তির শরীরে এগুলো পর্যায়ক্রমে বা এলোমেলোভাবে পরিলক্ষিত হতে পারে এবং তা হলো থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যা। থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যায় আরও অনেক উপসর্গ দেখা দিতে পারে যেমন- অত্যধিক গরম বা অত্যধিক ঠাণ্ডা অনুভূত হওয়া, শারীরিক ওজন কমে যাওয়া বা শারীরিক ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকা।

থাইরয়েড হরমোন মানবদেহের প্রায় সব বিপাকীয় কর্মকাণ্ডের গতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বলে এর অভাবে বা মাত্রা বৃদ্ধিতে শরীরের প্রায় সব সিস্টেমে অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হতে পারে তবে প্রত্যেক ব্যক্তিভেদে রোগের লক্ষণ আলাদা হয়ে  থাকে। থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যার জন্য উচ্চ রক্তচাপ, অনিয়ন্ত্রিত হৃত্স্পন্দন, কার্ডিও মাইওপ্যাথি, হার্ট ফেইলুর, ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়া, কর্মদক্ষতা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা সচরাচর পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন নামক একধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়ে থাকে যা রক্তের মাধ্যমে প্রত্যেকটি কোষে পৌঁছে কোষের বিপাকীয় কর্মতৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কোনো কারণে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রার বৃদ্ধি ঘটলে শরীরের বিপাকীয় তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়ে অনেক ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। যদি কোনো কারণে থাইরয়েড গ্রন্থি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাইরক্সিন নিঃসরণ করতে না পারে তবে রক্তে থাইরক্সিনের মাত্রার ঘাটতি দেখা দেয় এবং  শারীরিক বিপাকীয় কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়।

ডা. এম শমশের আলী, সিনিয়র কনসালটেন্ট

(কার্ডিওলজি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, কনসালটেন্ট, শমশের হার্ট কেয়ার এবং মুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর