রবিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

ছেলেদের বিলম্বিত বয়োসন্ধি

ছেলেদের বিলম্বিত বয়োসন্ধি

বালকের যদি ১৪ বছর বয়সেও অন্ডোকোষের আয়তন ৪ মিলিমিটারের বেশি না হয়, অথবা অন্ডোকোষের অনুপস্থিতি থাকে, বৃদ্ধিপ্রাপ্ত না হয় এবং বয়োসন্ধিকালীন পরিবর্তন অনুপস্থিত থাকে, তাহলে বালকের ক্ষেত্রে ১৪ বছরের পর বিলম্বিত বয়োসন্ধি বলা হবে। এ সময়ের মধ্যেই ৯৫% শতাংশ বালক যৌবন প্রাপ্তি সম্পন্ন হয়।

প্রকারভেদ ঃ প্রাইমারি হায়পারগোনাডোট্রপিক হায়পোগোনাডিজমঃ অন্ডোকোষ বা ডিম্বাশয়ের সমস্যা এর মূল কারণ। এক্ষেত্রে গোনাড ঃ (অন্ডোকোষ বা ডিম্বাশয়) প্রয়োজনীয় যৌন হরমোন তৈরিতে ব্যর্থ হয়। এর পিছনে ক্রমোজোমাল ত্রুটি (টার্নার সিনড্রোম, ক্লিনেফিল্টার সিনড্রোম ইত্যাদি) এর হাত থাকতে পারে। আবার টেস্টোস্টেরন হরমোনের ত্রুটিও থাকতে পারে। খুব কম করে হলেও, কিছু কিছু বালক-বালিকার গোনার্টি ঠিকমত এক্ষেত্রে

তৈরিই হয় না। হায়পোগোনাডোট্রপিক হায়পোগোনাডিজমঃ হায়পোথ্যালামাস বা পিটুইটারিতে প্রধান সমস্যাটি থাকে।

বিলম্বিত বয়োঃসন্ধিকালে বালকরা প্রধানত তাদের বাবা-মার সঙ্গে হরমোন বিশেষজ্ঞের কাছে হাজির হন। অভিভাবকরা তাদের ছেলেদের যৌবন প্রাপ্তি না হওয়ায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হন এবং চিকিৎসককে তা জানান। এ ছেলেদের অধিকাংশেরই দৈহিক উচ্চতা কাঙ্ক্ষিত মাত্রার চেয়ে অনেক কম থাকে। রোগী নিজে বা অভিভাবকরা সুনির্দিষ্টভাবে কোনো সমস্যা উপস্থাপন নাও করতে পারেন; বিশেষ করে ছেলেদের ক্ষেত্রে; বয়োসন্ধিকালে প্রবেশে সকল পরিবর্তন অনুপস্থিত থাকে। ছেলেদের দাড়ি-গোঁফ গজায় না, দৈহিক গঠনের পুরুষালী ভাব হয় না, লিঙ্গের আকার ছোট থাকে, লোম ও ঘামের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনও অনুপস্থিত থাকে। অন্ডোকোষ মাপলে ৪ মিলিমিটারের কম পাওয়া যায়, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণের ঘাটতি থাকবে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষাঃ প্রথমেই বর্তমানে বালক বা বালিকাটির দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছে কি না, সেটি নিশ্চিত হতে হবে। এ ধরনের রোগ অনেক ক্ষেত্রেই বালকটির দেহে বসবাসের সম্ভাবনা আছে। এর পর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিশেষ করে বাবা বা ভাইয়ের দৈহিক বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরিকল্পনা শুরু করতে হবে। বয়োঃসন্ধিকালের লক্ষণগুলোর অনুপস্থিতি পরিমাপের জন্য পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃত পদ্ধতি হলো-ট্যানার স্ট্যাজিং;  দৈহিক উচ্চতার পরিমাপ অবশ্যই নিতে হবে। রক্তের গ্রোথ হরমোন মাপলে অনেক সময় কম পাওয়া যেতে পারে; গ্লুকোকর্টিকয়েড মাপলে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। দেহের উপর ও নীচের অংশের অনুপাতও জেনে নিতে হবে। তবে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলোর মধ্যে রক্তের টেস্টোস্টেরন (ছেলেদের জন্য), এফএসএইচ ইত্যাদির মাত্রা দেখতে হবে। অধিকাংশ বিলম্বিত বয়োসন্ধির বালকদের ধীর গতিতে দৈহিক বৃদ্ধি হয় এবং তা দেরিতে হলেও অনেকটা স্বাভাবিকের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। ছেলেদের ক্ষেত্রে এটা বেশি ঘটে।

ডা. শাহজাদা সেলিম, সহকারী অধ্যাপক

এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর