মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পরিশ্রমজনিত শ্বাসকষ্ট

পরিশ্রমজনিত শ্বাসকষ্ট

পরিশ্রমজনিত শ্বাসকষ্ট শতকরা ১২ থেকে ১৫ ভাগ মানুষকে আক্রান্ত করে চলেছে। এর লক্ষণের মধ্যে রয়েছে বুকের মাঝে আড়ষ্টভাব, ছোট ছোট করে শ্বাস নেওয়া, শ্বাসের সঙ্গে সাঁ সাঁ শব্দ হওয়া, ক্লান্তি এবং ব্যায়ামের পর সুস্থ হতে অনেক লম্বা সময় লাগা। রোগ নির্ণয় নির্ভর করে প্রকৃত ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা পরীক্ষার ওপর। রোগীকে ব্যাপক স্বাস্থ্য শিক্ষা দেওয়া এ রোগের চিকিৎসায় খুবই প্রয়োজনীয় দিক। স্বল্পমেয়াদি বিটা-২ এগোনিস্ট ইনহেলারের মাধ্যমে সাধারণত চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রদাহবিরোধী ওষুধ যেমন ক্রোমলিন সোডিয়াম, নেডোক্রোমিল সোডিয়াম এবং স্টেরয়েড ইনহেলার এ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় রোগের অন্তর্নিহিত সমস্যা দূর করার জন্য। যদিও আমরা মুখে সেব্য থিওফাইলিন অথবা সালবুটামিল জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করি তবুও তার ভূমিকা পরিষ্কার নয়। যদি এ রোগ নির্ণিত না হয়ে থাকে তখন এ ব্যায়ামজনিত হাঁপানি, যা কিনা খুবই প্রচলিত। তাতে দেখা যায়, শ্বাসনালিতে সাময়িক বাধা যেটা সচল জীবনযাপনকে বাধাগ্রস্ত করে। কারণ কয়েক মিনিট ব্যায়ামের পরেই শুরু হয়ে যায় শ্বাসকষ্ট। কিন্তু যখন রোগটিকে চিহ্নিত করা হয় এবং ভালোমতো চিকিৎসা করা হয় তখন চিকিৎসার সুফলে রোগীর জীবনযাত্রার ব্যাপক স্বাচ্ছন্দ্য ঘটে। ১৯৮৪ সালের আমেরিকান অলিম্পিকের দলে ৫৯৭ জনের মধ্যে ৬৭ জনেরই (১১.২%) ব্যায়ামজনিত হাঁপানি ছিল। অথচ খেলোয়াড়দের মধ্যে ৪১ জনই সেই খেলায় পদক জয় করেছিল এ হাঁপানি নিয়েই। তাদের ব্যাপক সাফল্য সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছিল যে, সুষ্ঠুভাবে এবং পরিকল্পনামাফিক চিকিৎসা নিয়ে একজন হাঁপানি রোগীও পারে অলিম্পিক সোনা জয় করতে। এখন প্রশ্ন আসে পরিশ্রমজনিত শ্বাসকষ্ট কতটুকু প্রচলিত? এ রোগে জনসমষ্টির একটি বড় অংশ আক্রান্ত হয়। যাদের হাঁপানি আক্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের শতকরা ৯০ ভাগ রোগী তাদের রোগাক্রান্ত জীবনে এটার মুখোমুখি হয়েছে এবং অনেক হাঁপানি রোগীই ধারণা করেন যে, পরিশ্রমই তাদের হাঁপানি আক্রমণের সূত্রপাত ঘটিয়েছিল। শতকরা ৩৫ থেকে ৪০ ভাগ রোগী যাদের অ্যালার্জিজনিত নাকের প্রদাহ রয়েছে তারা এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়। কিছু অ্যালার্জেন, ঠাণ্ডা বাতাস, বায়ুদূষণ অথবা এসবগুলো একসঙ্গে মিলে এটা ঘটাতে পারে। সাধারণ জনগোষ্ঠীর মাঝে যারা হাঁপানি রোগী হিসেবে নির্ণিত হয়নি এবং যাদের অ্যালার্জিজনিত শ্বাসরোগ নেই তাদের মাঝে ব্যায়ামজনিত হাঁপানির সংখ্যা খুব কম।  যেমন : মাত্র ৩% থেকে ১০%। মানুষের কর্মক্ষম সময়ের জীবনে এ রোগের হার শতকরা ৩ থেকে ১২ ভাগ ওঠানামা করে। অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ, ইকবাল চেস্ট সেন্টার, মগবাজার ওয়্যারলেস, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর