বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফাইব্রয়েড টিউমার ও প্রেগনেন্সি

ফাইব্রয়েড টিউমার জরায়ুর একটি অতি পরিচিত টিউমার। ৩৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের প্রতি ১০০ জনে ৩৫ জন মহিলার এই টিউমার থাকতে পারে। এই টিউমারের লক্ষণগুলো হলো মাসিকের সময় অধিক রক্তপাত ও ব্যথা হওয়া। যদিও ৭৫% ক্ষেত্রে এই টিউমার কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে। প্রেগনেন্সির সময় কিংবা অন্যান্য কারণে পেটের আল্ট্রাসাউন্ড করার সময় ধরা পড়ে। অবস্থান ভেদে এই টিউমার তিন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন সাব সেরাস, ইন্ট্রা ম্যুরাল এবং সাব মিউকাস। এর মধ্যে সাধারণত সাব মিউকাস টিউমারই অধিক জটিলতার কারণ হয়ে থাকে। গর্ভধারণের আগেই যদি এই টিউমার ধরা পড়ে তবে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। টিউমারটি যদি আকারে ছোট হয়ে থাকে এবং বাচ্চা হওয়ার পথে এটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করলে গর্ভধারণের চেষ্টা করে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে টিউমার অপসারণ করার দরকার হবে যদি—দীর্ঘদিন চেষ্টার পরও গর্ভধারণে ব্যর্থ হয় এবং বন্ধ্যত্বের আর কোনো কারণ পাওয়া না যায়।  তিন বা এর অধিকবার গর্ভপাত হলে। বন্ধ্যত্ব সমস্যার জন্য টিউমার অপারেশন করার আগে কিছু শর্ত পূরণ করা জরুরি। বন্ধ্যত্বের জন্য অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তা দেখে নেওয়া, হিস্টারো স্যালফিংগোগ্রাম বা ল্যাপারোস্কপি করে ফেলোপিয়ান টিউব (ডিম্বনালি) খোলা কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে, স্বামীর শুক্রাণু বা বীর্য নরমাল থাকতে হবে। জরায়ুতে টিউমার থাকা অবস্থায় গর্ভধারণ হয়ে থাকলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা কোনো অসুবিধা করে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিউমারের কারণে মা এবং সন্তানের বিভিন্ন জটিলতা হতে পারে, যেমন—গর্ভপাতের আশঙ্কা বেশি থাকে। বিশেষ করে টিউমারটি যদি সাব মিউকাস হয়। কারণ সাব মিউকাস টিউমার জরায়ুর ভিতরে অবস্থিত হওয়ায় ভ্রূণ এবং প্লাসেন্টার স্থাপনকে বাধাগ্রস্ত করে।  প্রেগনেন্সির কারণে এই টিউমারেরও কিছু পরিবর্তন হয়। যা জটিলতা তৈরি করে। যেমন, জরায়ু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিউমারের আকার পরিবর্তন হয়। অনেক সময় টিউমারের মধ্যে রক্তক্ষরণ হয়ে অথবা পানি জমা হয়ে পেটে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে।

ডা. নুসরাত জাহান

সহযোগী আধ্যাপক (অবস-গাইনি) ডেলটা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর