রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নিপল ডিসচার্জ কী ও কেন

নিপল ডিসচার্জ কী ও কেন

নিপল ডিসচার্জ (Nipple Discharge)  বা স্তন বৃন্ত দিয়ে রস নিঃসরণ হওয়া, স্তন রোগের একটি অন্যতম উপসর্গ। স্তনের সমস্যার কারণে ডাক্তারের কাছে আসা রোগীদের মাঝে অন্তত ৫% আসেন এই অস্বাভাবিক নিপল ডিসচার্জ সংক্রান্ত উপসর্গ নিয়ে। যার মাঝে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডিসচার্জ বিভিন্ন স্তন রোগের কারণে  হয়ে থাকে এবং  ৫-১০% ক্ষেত্রে তা স্তন ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে। তাই অনেক ক্ষেত্রেই এই উপসর্গ রোগীদের মাঝে ভীতির উদ্রেক করে থাকে। তবে মনে রাখবেন, অনেক ক্ষেত্রে অন্তর্নিহিত রোগী ছাড়াও নিপল ডিসচার্জ হতে পারে। যা Physiological বা শরীরবৃত্তীয়। লক্ষণটি তখনই গুরুত্বপূর্ণ যখন, রস নিঃসরণ সাধারণত একপাশের স্তন থেকে হয় (Unilateral), একটি নালি বা ছিদ্র নিয়ে হয় (Single Duct), আপনা-আপনি/ নিজে নিজে হয় (Spontaneous), দীর্ঘসময় হয়, রক্ত বা রক্তমিশ্রিত থাকে (Blood Stained), ডিসচার্জের সঙ্গে স্তনে চাকা/পিণ্ড থাকে (Break lup), বয়স ৩৫ ঊর্ধ্ব হলে। নিপল ডিসচার্জের ধরন : ডিসচার্জ বা নিঃসরণ বিভিন্ন প্রকৃতির ও রঙের হতে পারে যেমন- Serous (Straw color / খড় বর্ণ), Sero-sanguinous (রক্তমিশ্রিত/গোলাপি আভাযুক্ত), Bloody (রক্ত বর্ণ), Watery/ clear  (পানির মতো), Milky (দুগ্ধবর্ণ), Green (সবুজ), Brown (খয়েরি বর্ণ), Blue black (কালচে), Pus (পুঁজের মতো)

নিপল ডিসচার্জের কারণ : ক) Physiological /শরীরবৃত্তীয় : যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে Milky বা দুধের মতো; সাধারণত যাদের হয়ে থাকে- নবজাতক (Neonate), গর্ভবতী নারীদের (Pregnant), স্তন পান করাচ্ছেন এমন (Lactation), স্তন পানের পরবর্তী সময় (Post Lactation), মেকানিক্যাল  (Stimulation); খ) Ductal Pathology /দুগ্ধনালির রোগ : ডাক্ট এক্টেসিয়া (Duct Ectasia), সিস্ট (Cyst), প্যাপিলোমা (Pailloma), ক্যান্সার (Cancer), প্যাজেট (Paget Disease), গ) গ্যালাকটোরিয়া (Golactorrhoea): বিভিন্ন ওষুধ যেমন- ডমপেরিডোন, মিথাইডোপা, ইস্ট্রোজেন ইত্যাদি। (ঘ) ফাইব্রেসিস্টিক (Fibrocystic Change) , (ঙ) আঘাত বা প্রদহজনিত কারণ (চ) স্তনে সংক্রমণ বা Infection - এর জন্য।

রোগ নির্ণয় : যদিও ৫-১০% ক্ষেত্রে নিপল ডিসচার্জ ক্যান্সার রোগের কারণে হয়ে থাকে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা অন্যান্য রোগের কারণে হয়ে থাকে। তাই সঠিক চিকিৎসার জন্য তার অন্তর্নিহিত কারণ জানা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে ডিসচার্জের ধরন ভেদে কিছু পরীক্ষা করা হয়ে থাকে যেমন-

রক্তের পরীক্ষা : প্রোল্যাকটিন (Prolactin) লেভেল, থাইরয়েড (Thyroid) লেভেল, রসের পরীক্ষা-কালচার (Culture) পুঁজ হলে, সাইটোলজি (Cytology) পানির মতো বা রক্ত মিশ্রিত হলে, দুগ্ধনালির পরীক্ষা-ডাক্টোগ্রাফি (Ductography), ডাক্টোস্কোপি (Ductoscopy),স্তনের পরীক্ষা (সঙ্গে চাকা বা Lump থাকলে), আল্ট্রাসনোগ্রাম (Ultrasonogram), ম্যামোগ্রাম (Mammogram), বায়োপসি (Biopsy)। তাই প্রাথমিক অবস্থা থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। অন্যথায় জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

ডা. আফরিন সুলতানা, সার্জারি বিশেষজ্ঞ, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর