এ রাতে হঠাৎ নামে ঝাঁকে ঝাঁকে কনভয়
ঘুমন্ত মানুষ কাঁপে— চোখে মুখে তার ভয়।
খুনের নেশায় যমদূতের হিংস্র কড়া নাড়া।নবজাতকের কান্নায় চিৎকার করে পাড়া।
লেলিহান শিখায় শহর বস্তি ছাত্রাবাস পোড়ে।
আকাশে বাতাসে গগনবিদারী আর্তনাদ ওড়ে।
পথে ঘাটে পড়ে— গুলিতে ঝাঁঝরা লাশ।
চারিদিকে শুধু হত্যা আর হত্যার উল্লাস!
আমার বোনকে হায়েনা খুবলে খায়
ভাইয়ের মস্তক গুলিতে উড়ে যায়
পিতা ছিন্নভিন্ন বেয়োনেটের খোঁচায়
রক্তাক্ত মেজেতে মা আমার লুটায়
ভয় বাড়ে স্তব্ধ নীরবতায়!
এ কেমন ভয় নামে— ভয়!
আমার সবুজ দেশে
হলোকাস্ট বা ভিয়েতনাম আজ
গণহত্যার উপমা হয়!
গাঁয়ে গঞ্জে মাটিতে পাহাড়ে
পদ্মা মেঘনা যমুনার তীরে
উথাল ঢেউয়ে নাওয়ের পালে
পাখির পাখায় হাওয়ায় হাওয়ায়
শেখ মুজিবের ডাক আসে :
এক হও জোট বাঁধো
বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো
বাংলাদেশ স্বাধীন করো...
সেই বসন্তে ঝরাপাতায়
অস্ত্র কাঁধে অস্ত্র হাতে
মুক্তিযুদ্ধ ছুুটে আসে।
তরুণ প্রাণের আত্মদান
লক্ষ বোনের অসম্মান—
মুক্তিযুদ্ধ বীর বাঙালির।
যুদ্ধ শেষে পোড়া দেশে
রক্তমাখা পুব আকাশে
আলোয় আলোয় স্বপ্ন ফোটে
ঘাসে গাছে ফুলে ফুলে
স্বাধীনতার সূর্য ওঠে।