সফলতার ৪৮ বছর অতিক্রম করেছে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ‘আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি’। দেশজুড়ে ১ হাজার ৪০০’র বেশি শাখা-উপশাখা থেকে সেবাদানের মাধ্যমে কোটি মানুষের দোরগোড়ায় আস্থার প্রতিবেশী হয়ে পৌঁছেছে ব্যাংকটি। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আইএফআইসি পূর্ণাঙ্গভাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালে। গৌরবময় অতীত ও অগ্রযাত্রার মধ্য দিয়ে আজ আইএফআইসি ৪৮ বছর পূর্ণ করে ৪৯ বছরে পদার্পন করছে। ৩২.৭৫% সরকারি মালিকানা, ৬ হাজারের বেশি দক্ষ কর্মী, ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি আমানতের মাইলফলক এবং লাখো গ্রাহকের আস্থাই আইএফআইসির এগিয়ে চলার শক্তি বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কম সময়ে ঝামেলাহীনভাবে এক কাউন্টারেই সব রকম ব্যাংকিং সেবা দিতে আইএফআইসি ব্যাংকই সর্বপ্রথম চালু করেছে ওয়ান স্টপ ব্যাংকিং সার্ভিস। গ্রাহকরা অতি অল্প সময়ে, সহজে ও ঝামেলাহীনভাবে আইএফআইসি থেকে ব্যাংকের সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। শুধু তাই নয় আইএফআইসি’র একজন গ্রাহক দেশের যেকোনো আইএফআইসি শাখা বা উপশাখা থেকে সেবা পাচ্ছেন। ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীকে সেবার আওতায় আনতেই আইএফআইসি ব্যাংকের উপশাখার যাত্রা শুরু। মাত্র ৫ বছরের পথচলায় আইএফআইসি উপশাখার আমানত আজ ১৪ হাজার কোটি টাকার মত। এই অর্জনের মাইলফলকই প্রমাণ করে আইএফআইসি উপশাখা আজ দেশজুড়ে মানুষের প্রতিবেশী হয়ে দৃঢ় আস্থা অর্জন করেছে।
এক একাউন্টেই কারেন্ট ও সেভিংস একাউন্টের সুবিধা নিয়ে, জমাকৃত টাকার উপর দৈনিক হারে আকর্ষণীয় মুনাফা, সারা দেশে ১৪ হাজারেরও বেশী এটিএম থেকে বিনা খরচে টাকা তোলার সুযোগ, ডুয়েল কারেন্সি কার্ডসহ আরো অনেক সুবিধা সম্বলিত ‘আইএফআইসি আমার একাউন্ট’ গ্রাহকদের মাঝে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। পাশাপাশি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে আইএফআইসি ব্যাংক চালু করে ‘আইএফআইসি সহজ একাউন্ট’। এই হিসাব মাত্র ১০ টাকায় খোলা যায়। ফলে, সকল শ্রেণীর বিপুল সংখ্যক মানুষ আজ আইএফআইসি ব্যাংকের গ্রাহক সেবার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বদলে গেছে তাদের জীবনযাত্রা। জানা গেছে, গ্রামভিত্তিক অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিতেই ‘আইএফআইসি সহজ ঋণ’ ও ‘আইএফআইসি আমার সুবর্ণগ্রাম’ ঋণ সুবিধা। হোম লোন সেক্টরেও আইএফআইসি ব্যতিক্রম নয়। হোম লোন প্রদানে ‘আইএফআইসি আমার বাড়ি’ বিগত কয়েক বছর ধরেই রয়েছে শীর্ষ স্থানে। গ্রাহকের হাতের মুঠোয় আইএফআইসি ব্যাংক পৌঁছে দিয়েছে সর্বাধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তি ‘আইএফআইসি আমার ব্যাংক’। দেশের আর্থিক প্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবনী সেবায় অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ আইএফআইসি ব্যাংক অর্জন করেছে মর্যাদাপূর্ণ ‘ফিনটেক অ্যাওয়ার্ড’। গ্রাহক সমস্যা সমধানে ১৬২৫৫ নম্বরে ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহে ৭ দিন চালু আছে আইএফআইসি ব্যাংক গ্রাহক সেবা কেন্দ্র। পাশাপাশি অত্যাধুনিক ভিআইভিআর সেবার মাধ্যমে গ্রাহকগণ প্রতিনিয়ত তাদের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সম্পর্কে হালনাগাদ থাকতে পারছেন। গ্রাহক সুবিধামতো বিকাশ, নগদ, আরটিজিএস, বিইএফটিএন ও এনপিএসবি ইত্যাদি মাধ্যমে তাদের লেনদেন করতে পারছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এখন সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের সকল শাখা-উপশাখা থেকে দ্রুত ও সহজেই গ্রহণ করছেন তাদের প্রিয়জনেরা, বাড়ির পাশ থেকেই। সর্বাধুনিক ইসলামী ব্যাংকিং সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে আইএফআইসি চালু করেছে “আইএফআইসি ইসলামিক”। ইসলামী শরীয়তের মূলনীতি, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা এবং দেশ-বিদেশে ইসলামীক ব্যাংকিংয়ের মানদন্ড ও নিয়ম-পদ্ধতি অনুসরণ করে ইসলামীক ব্যাংকিং কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, আলেম ও ফকীহদের সমন্বয়ে গঠিত একটি শরীয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটি। ইসলামীক ব্যাংকিংয়ের সকল অর্থ স্বতন্ত্র হিসাবের মাধ্যমে ব্যাংকের কনভেনশনাল ব্যবস্থাপনা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা রাখা হয়। মহামারীর সময় পুরো বিশ্ব যখন টালমাটাল তখন দৃঢ়তার সাথে ব্যাংকিং কার্যক্রম চলমান রেখেছে আইএফআইসি ব্যাংক। কোভিডকালে নতুন করে ব্যাংকটিতে কর্মসংস্থান হয় প্রায় ৩ হাজার মানুষের। আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মীদের ৩০ শতাংশই নারী। নারীবান্ধব আইএফআইসি ব্যাংক একদিকে যেমন মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নারীদের সমতা নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে আপামর সাধারণ মানুষ ও নারীদের ব্যাংকিং সেবায় এগিয়ে নিতে এবং জ্ঞান ও ধারণা দিতে আইএফআইসি ব্যাংকের শাখা-উপশাখায় চালু করেছে ‘আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচি’। প্রতিবেশীর আন্তরিকতায় সকল শাখা-উপশাখায় উদযাপন হয় ‘প্রতিবেশী উৎসব’। ২০১১ সাল থেকে “আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরষ্কার” প্রদানের পাশাপাশি প্রবর্তন করেছে “আইএফআইসি ব্যাংক সংস্কৃতিরত্ন সম্মাননা”। ব্যাংক কর্মীদের পরিবারে নতুন শিশু এলে ব্যাংকের পক্ষ থেকে ‘গোল্ড কয়েন’ দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। কর্মীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ন মেধাবী সন্তানদের সংবর্ধনা দেয় এবং ‘চিত্রাঙ্কন উৎসব’ আয়োজন করে। এধরনের উৎসব আয়োজন ব্যাংকের নিজস্ব এক সমৃদ্ধ সংস্কৃতি।