ইতালিতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৭ জনে। আহত হয়েছেন ৩৬৮ জন। এখনও অনেক মানুষ ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছে। হতাহতদের অধিকাংশ শিশু জানিয়ে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। খবর বিবিসির।
দেশটির মধ্যাঞ্চলের আমব্রিয়া, লাৎজিও এবং মার্কে প্রদেশে রাতভর জীবিতদের খোঁজে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ জন উদ্ধারকর্মী কাজ করে যাচ্ছেন।
এর আগে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত সাড়ে ৩টা ৩৬ মিনিটে এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) মতে, দেশটির পেরুগিয়া শহর থেকে ৭৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিলো ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
বৃহস্পতিবার ইতালির সিভিল প্রোটেকশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহতের মধ্যে রিয়েতি প্রদেশেই মারা গেছেন ১৯০ জন। এছাড়া ৫৭ জন মারা গেছেন প্রতিবেশি অ্যাসকোলি পিসনো প্রদেশে।
এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারি কাজে সহায়তা করার জন্য ইতালির সেনাবাহিনীকেও সেখানে নিয়োগ করা হয়েছে। রাতভর উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে উদ্ধারকর্মীরা।
“যে মাত্রার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা ভয়াবহ। শহরের কিছু অংশ মাটির সাথে প্রায় মিশে গেছে। এই অবস্থার মধ্যে আমরা রাতের খাবার তৈরি করার জন্য কিছু রান্নার ব্যবস্থা করছি। সেটি যদি সম্ভব না হয় তাহলে আগামীকাল আমরা খাবার তৈরি করব। দিনভর সবচেয়ে বড় সমস্যাটি ছিল ট্রাক এবং অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলোতে নিয়ে যাওয়া”। এক সাক্ষাৎকারে আমাত্রিচে থেকে ইটালির রেড ক্রসের মুখপাত্র টমাসো ডেলা লংগা সেখানকার পরিস্থিতি এভাবে বর্ণনা করেন।
এর আগে ওই এলাকা পরিদর্শন করে প্রধানমন্ত্রী মাটিও রেনজি সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, যে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ভূমিকম্পের ফলে প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া আরেকটি শহর আক্কুমোলির মেয়র স্টেফানো পেত্রুচ্চিস বলেন, তিনি আর জীবিত কাউকে উদ্ধারের আশা করছেন না। এখন তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আক্রান্ত মানুষদের জন্য রাত কাটানোর সুব্যবস্থা করা।
মধ্য ইটালিতে ক্ষয়ক্ষতি হলেও পুরো ইতালিজুড়েই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। দিনভর আরো কিছু ভূকম্পন অনুভূত হয় ওই এলাকায়।
সাম্প্রতিক সময়ে ইটালিতে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল ২০০৯ সালে, যাতে তিন শতাধিক মানুষ মারা যায়। এছাড়াও ২০১২ সালে নয় দিনের ব্যবধানে দুটি ভূমিকম্পে ২০ জনের বেশি নিহত হয়।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব