২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৭:১২
খবর এবেলার

ছুটি পেয়েও বাড়ি ফিরছেন না বিএসএফ সদস্যরা

অনলাইন ডেস্ক


ছুটি পেয়েও বাড়ি ফিরছেন না বিএসএফ সদস্যরা

ছুটি নয়, দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তাই উরির সেনা ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলার পরে ছুটি পেয়েও পরিবারের কাছে না ফিরে দায়িত্ব পালন করার কথা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএসএফের একাধিক পুরুষ এবং নারী সদস্য। তাদের সাফ কথা, আগে উরির হামলার বদলা নিয়ে পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেবেন, তার পরে বাড়ি ফিরবেন। 

ভারতের এক হিন্দি দৈনিকের বরাত দিয়ে এবেলা জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীর সীমান্ত পাহারার দায়িত্বে থাকা অধিকাংশ সেনা সদস্যদেরই এখন এই মনোভাব। তাদেরই একজন বিএসএফ কনস্টেবল এস ভোরা। বেশ কয়েকমাস পরে বিএসএফ হেডকোয়ার্টার থেকে এই কনস্টেবলের ছুটি মঞ্জুর হয়েছিল। বাড়ি ফেরার ট্রেনের টিকিটও কনফার্ম হয়ে গিয়েছিল। এরই মধ্যে উরি কাণ্ড ঘটে। জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ১৮ সেনা। এর পরেই বাড়ি না ফেরার সিদ্ধান্ত নেন ওই কনস্টেবল।

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছুটি না নেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে এস ভোরা স্পষ্ট জানান, পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিয়ে তবেই ছুটি উপভোগ করতে বাড়ি ফিরবেন তিনি। শুধু এই কনস্টেবল একা নন, জম্মু-কাশ্মীরের ফিরোজপুর এলাকায় পাক সীমান্তে দায়িত্বে থাকা একাধিক বিএসএফ সদস্যদের বক্তব্য উল্লেখ করে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অধিকাংশ সেনারই এই পরিস্থিতিতে ছুটি পেলেও বাড়ি না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের এখন একটাই লক্ষ্য, পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেওয়া। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর তৈরি হওয়া উত্তেজনার মধ্যে যে কোন পরিস্থিতিতে দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে চান তারা। তার জন্য প্রিয়জনদের ভুলে থাকতেও মানসিকভাবে প্রস্তুত তারা।

শুধু বিএসএফের পুরুষ সদস্যরাই নন, বিএসএফে কর্মরত নারী সদস্যরাও একই ধরনের মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন।রাজস্থানের ববিতা খাদের, অনিতা মীনা, মধ্যপ্রদেশের সীমা অঙ্গলরা গত চার বছর ধরে বিএসএফ চাকরি করছেন। তাদের কর্মজীবনে এই প্রথমবার ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এমন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই এই নারী সদস্যদের পরিবারের সদস্যরা ফোন করে তাদের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। কারও বাড়ির লোক ছুটির আবেদন করার পরামর্শ দিচ্ছেন, কারও ক্ষেত্রে পরিবারের লোক সীমান্তে পাহারার বদলে অফিসের কোন কাজ করার জন্য এই নারীদের অনুরোধ করছেন। কিন্তু বিএসএফের এই নারী সদস্যরা নিজেদের পরিবারের সেই সব পরামর্শ বা অনুরোধ কানে তুলতে নারাজ। প্রতিদিন অস্ত্র হাতে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে পাহারা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও দেশেরে নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করতে নারাজ তারা।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অংশে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনা সদস্যদের  মধ্যে এখন একই ধরনের আবেগ কাজ করছে। রাজনীতিবিদরা কূটনৈতিক রণকৌশল ঠিক করতে ব্যস্ত, সেনাবাহিনীর সদস্যরা আপাতত একটা লক্ষ্যেই অনড়— পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিতে হবেই!

বিডি-প্রতিদিন/২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর