৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৩:২৯

হামলার আশঙ্কায় সীমান্ত থেকে সরানো হচ্ছে ভারতীয় গ্রামবাসীদের

অনলাইন ডেস্ক

হামলার আশঙ্কায় সীমান্ত থেকে সরানো হচ্ছে ভারতীয় গ্রামবাসীদের

পরমাণূ শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চরমে উঠেছে। চির বৈরী এই দুই প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে সৈন্য মোতায়েন, যুদ্ধ বিমান প্রস্তুত রাখা, পরমাণূ অস্ত্র ব্যবহারের পাল্টাপাল্টি হুমকির ঘটনায় কার্যত ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের দামামা বাজছে।

এছাড়া ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরের চাপিরিয়াল ও স্যামসওয়ান সীমান্তের নিরাপত্তা চৌকি লক্ষ্য করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গুলি এবং জম্মুর আখনুর সেক্টরে নিরাপত্তা চৌকিতে পাক সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর গুলি বিনিময়ে পাঞ্জাবসহ গোটা পশ্চিম সীমান্তে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাকিস্তানের সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের 'প্রতিশোধ' নেওয়ার হুমকিতে আশঙ্কার চোরাস্রোত বইছে নয়াদিল্লির নর্থ-সাউথ ব্লকেও। তাই কোনো ঝুঁকি না নিয়ে আজ শুক্রবার থেকেই পাঞ্জাব সীমান্তের দশ কিলোমিটারের মধ্যে যে সব গ্রাম রয়েছে, তা খালি করার কাজ শুরু করেছে ভারত। হামলার আশঙ্কায় সরকারি চিকিৎসক, নার্স ও পুলিশদের ছুটি বাতিল করে দিয়েছে পাঞ্জাব প্রশাসন।

এছাড়া সীমান্তে বাড়তি সেনা মোতায়েন, বাঙ্কার খোঁড়া হচ্ছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য বাতিল করা হয়েছে আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্তে প্রাত্যহিক সেনা মহড়া। রাজস্থান, গুজরাত এবং জম্মু ও কাশ্মীরেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সরানো হচ্ছে সেখানকার সীমান্তবর্তী বা নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গ্রামের বাসিন্দাদেরও।

বৃহস্পতিবার রাতে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি শিবির উড়িয়ে দেওয়ায় দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মহম্মদ আসিফ পরমাণু হামলার হুমকি দিয়েছেন।

বর্তমানে ভারতের পশ্চিম সীমান্তে বিশেষ মহড়া অভিযান চালাচ্ছে পাকিস্তানের সেনারা। তাতে অংশ নিয়েছে স্থল ও বিমানবাহিনী। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে প্রায় ১৫ হাজার পাকিস্তানি সেনা ওই অভিযানে সক্রিয় রয়েছে।

আজ শুক্রবার সকালে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদলকে ফোন করে বলেন, 'পাল্টা হামলা চালানোর আশঙ্কা রয়েছে। তাই সীমান্ত-সংলগ্ন সমস্ত গ্রাম খালি করে দেওয়া হোক।'

পাঞ্জাবের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রায় ৫৫৩ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তের কাছাকাছি যে গ্রামগুলো রয়েছে, জেলা প্রশাসন দুপুর থেকেই সেগুলো খালি করার কাজ শুরু করেছে। গ্রামগুলোর দখল নিয়ে খোঁড়া হচ্ছে বাঙ্কার। সীমান্তে মজুদ করা হচ্ছে অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ। সীমান্তের দায়িত্ব এখনও বিএসএফের হাতে থাকলেও, প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে পাঠানকোট সেনা ছাউনিকেও। খালি করে দেওয়া হয়েছে পাঠানকোট হাসপাতালের আপৎকালীন বিভাগ। এছাড়া রোগীদের অন্যত্র পাঠানো হয়েছে।

এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পাঠানকোটে সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা নিহত হন। এ ঘটনার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয় ভারতের। পাঠানকোট হামলায় পাকিস্তান জড়িত বলে ভারত দাবি করলেও পাকিস্তান বরাবরই তা নাকচ করে আসছে। এ ঘটনার জেরে দুই দেশের মাঝে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

সূত্র : আনন্দবাজার

বিডি-প্রতিদিন/ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬/ এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর