১৯ অক্টোবর, ২০১৬ ১১:১২

সাবমেরিন সংকটে ভারত

অনলাইন ডেস্ক

সাবমেরিন সংকটে ভারত

ভারত পাকিস্তানের উত্তেজনা এখনও চরমে। দু'দেশই নিজেদের মতো করে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে স্ব স্ব দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলি খবর প্রচার করছে। এসবের মাঝেই খবর এল ভারত নাকি সাবমেরিন সংকটে ভুগছে। নিরবে কাজে নেমে পড়েছে দেশটির একমাত্র পরমাণু বিদ্যুৎ চালিত সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্ত। কিন্তু তাতেও নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন না দেশটির নৌ বাহিনীর কর্মকর্তারা।

পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে যখন ভারতের উত্তেজনা তুঙ্গে, সেই সময় দেশটির নৌ বাহিনীর কর্মকর্তারা মনে করছেন, তাদের হাতে এখন সাবমেরিনের যে সম্ভার হয়েছে, তাতে পাকিস্তান-চীনের সঙ্গে পেরে ওঠা মুশকিল। এই দুই দেশের সঙ্গে পাল্লা দিতেই ছ’টি ফরাসি স্করপেন সাবমেরিনের কথা বলেছিল নৌ বাহিনী। 

প্রথমটির নৌ বাহিনীতে যোগ দেওয়ার কথা চলতি বছরের শেষে। কিন্তু তার আগেই, অাগস্ট মাসে এই সাবমেরিনের যাবতীয় রহস্য ফাঁস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছিল একটি অস্ট্রেলীয় সংবাদপত্র। ফলে ওই সাবমেরিনের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। 

আইএনএস অরিহন্ত ও স্করপেন-সাবমেরিন আইএনএস কালভরি হাতে এলেও ভারতের নৌ বাহিনীর সাবমেরিনের সম্ভার একেবারেই আহামরি নয়। নৌ বাহিনী সূত্রের বক্তব্য, বাহিনীর হাতে মাত্র ১৩টি পুরনো সাবমেরিন রয়েছে। যার অধিকাংশই জরাগ্রস্ত। রাশিয়া থেকে ধার করে আনা একটি পরমাণু চালিত সাবমেরিন আইএনএস চক্র নিয়ে কাজ সামাল দেওয়া হচ্ছে। সেই তুলনায় চীনের হাতে রয়েছে পাঁচটি পরমাণু চালিত সাবমেরিন এবং ৫১টি সাবমেরিন। তার সঙ্গে আরও ৭ হাজার কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সম্পন্ন পাঁচটি সাবমেরিন কিনছে চীনের নৌ বাহিনী। খানিকটা পিছিয়ে থাকলেও পাকিস্তানের কাছে রয়েছে ৫টি সাবমেরিন।

এই পরিস্থিতিতে ভারতের নৌ বাহিনীর যুদ্ধজাহাজ তৈরি ও কেনার দায়িত্বে থাকা ভাইস অ্যাডমিরাল জি এস পাব্বি দেশের শিল্পমহলের কাছে এগিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন। শিল্পমহল, বণিকসভার সঙ্গে এক আলোচনায় পাব্বি বলেন, নৌ বাহিনী ও শিল্পমহল মিলে দেশেই সাবমেরিন তৈরির পথে হাঁটার এটাই উপযুক্ত সময়। 

শিল্পমহলকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘পি-৭৫আই প্রকল্পে ছ’টি সাবমেরিন তৈরির সুযোগ খুলে দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য। যদিও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পি৭৫আই প্রকল্প নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানা চলছে।

পরমাণু চালিত ডুবোজাহাজ অরিহন্ত এখন কাজ শুরু করলেও তা নিয়ে টালবাহানা কম হয়নি। নব্বইয়ের দশকে এ নিয়ে ভাবনাচিন্তার শুরুর পর অবশেষে এই ধরনের তিনটি ডুবোজাহাজ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। অরিহন্ত প্রথম পানিতে নামে ২০০৯ সালে। ২০১৪-র শেষ থেকে সমুদ্রে মহড়া শুরু হয়। ৬ হাজার টনের এই সাবমেরিন থেকে পরমাণু বোমা সম্বলিত দূরনিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া  সম্ভব। পরমাণু বিদ্যুৎ চালিত বলে দীর্ঘসময়, টানা কয়েক মাস এই ডুবোজাহাজ পানির নিচে থাকতে পারে। ফলে এর হদিশ পাওয়াও যথেষ্ট কঠিন। নৌ বাহিনীর একটি সূত্রে অবশ্য বলা হয়েছে, সাবমেরিনের ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র এখনও পুরোপুরি তৈরি নয়। তবে এর মধ্যে দ্বিতীয় পরমাণু সাবমেরিন, আইএনএস অরিধমান তৈরির কাজও শেষ পর্যায়ে। দু’বছরের মধ্যেই তা নৌ বাহিনী হাতে পেতে পারে।

 

বিডি প্রতিদিন/১৯ অক্টোবর ২০১৬/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর