৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২০:৫২

এবার মমতা ও রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠির ঠাণ্ডা যুদ্ধ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

এবার মমতা ও রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠির ঠাণ্ডা যুদ্ধ

ফাইল ছবি

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন টোল প্লাজায় সেনা মোতায়েন নিয়ে প্রতিবাদ করায় রাজ্যটির রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠির ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।

পশ্চিমবঙ্গের দুই নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ডানকুনি ও পালসিটের টোল প্লাজায় সেনা মোতায়েন নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই কেন্দ্রকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন ‘আমি জানতে চাই যে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থার পাশাপাশি কি গণতন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপরও জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে? এখানে কি সেনা অভুথ্যান হয়েছে? এটা অভূতপূর্ব, অত্যন্ত উদ্বেগজনক ব্যাপার। রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে কেন এই দুইটি টোল প্লাজায় সেনা নামানো হয়েছে? সেনার বিরুদ্ধে গাড়ি থামিয়ে চাঁদাবাজিরও অভিযোগ তোলেন মমতা।

সেনার বিরুদ্ধে এই মন্তব্য করায় মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেন রাজ্যপাল। আজ শনিবার কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে মমতার নাম না করে তিনি জানান, ‘সেনাবাহিনীর মতো কোনো দায়িত্বশীল সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার আগে সবার ভাবা উচিত। সেনাবাহিনীকে ছোট করবেন না। সেনাবাহিনীকে অপবাদ দেবেন না।’

মমতাকে উদ্দেশ্য করে রাজ্যপালের এই বার্তার পরই ট্যুইটে সরব হন মমতাও। তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় সরকারের সুরে কথা বলছেন। তিনি ৮ দিন ধরে রাজ্যে ছিলেন না।'

রাজ্যপালের এই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহীত করে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী জানান, ‘কোনো মন্তব্য করার আগে রাজ্যপালের উচিত সমস্ত তথ্য পরীক্ষা করে দেখা।'

সেনার বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় শুক্রবারই প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজুও মমতাকে লক্ষ্য করে মন্তব্য করেন।

সেনা নিয়ে মমতা রাজনীতি করছেন বলেও অভিযোগ করেন ওই দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কিরেন রিজিজু তো পাকিস্তান প্রসঙ্গ টেনে মমতাকে বলেন, ‘ভারত তো আর পাকিস্তান নয় যে এখানে সেনা অভ্যুত্থান হবে। তাই রাজনীতি থেকে সেনাকে দূরে রাখুন।'

দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পর এবার মমতা সেনা বিরোধিতায় সরব হলেন রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠিও।

উল্লেখ্য, সেনা সরানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৩৬ ঘণ্টা সচিবালয় নবান্নে কাটান মুখ্যমন্ত্রী। এই ইস্যুতে শুক্রবার ভারতের সংসদেও তৃণমূলসহ বিরোধীদলগুলো বিক্ষোভ করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজভবনের সামনেও অবস্থান নেন তৃণমূলের শীর্ষ মন্ত্রী-নেতা-সমর্থকরা।

যদিও সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়, সেনা মোতায়েন হয়নি। জরুরি অবস্থায় সেনার যদি গাড়ির দরকার হয় সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এই এলাকায় কতগুলো গাড়ি পাওয়া যেতে পারে তারই তথ্য নেওয়া হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ সেনা জওয়ানরা নিরস্ত্র ছিলেন। পাশাপাশি চাঁদাবাজির অভিযোগও মিথ্যা।

মমতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তা প্রমাণের কথাও বলা হয় সেনার পক্ষ থেকে।

বিডি প্রতিদিন/ ৩ ডিসেম্বর ২০১৬/ এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর