৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৪:৫৫

রবীন্দ্রনাথের চুরি যাওয়া নোবেল পদক তদন্তে সাফল্য গোয়েন্দাদের

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

রবীন্দ্রনাথের চুরি যাওয়া নোবেল পদক তদন্তে সাফল্য গোয়েন্দাদের

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চুরি যাওয়া নোবেল পদক তদন্তে বড় সাফল্য পেল পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি গোয়েন্দারা। পদক চুরির অভিযোগে সঞ্জয় হাজরা নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। প্রদীপ বাউরি নামে বাউল শিল্পীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গত শুক্রবার বীরভূম জেলার বোলপুরের বাসিন্দা সঞ্জয়কে আটক করে গোয়েন্দারা। 

সোমবার সিআইডি’র এক কর্মকর্তা জানান, ‘নোবেল পদক চুরির তদন্তের কিনারা করতে বাউরি আমাদের অনেক তথ্য দিয়েছে। তার ভিত্তিতেই গত শুক্রবার বোলপুরে নিজের বাড়ি থেকে সঞ্জয়কে আটক করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছি’। বাউরির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত কয়েকদিন ধরেই বোলপুরসহ একাধিক জায়গায় জোর অভিযান চালাচ্ছে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তদন্তে অগ্রগতির জন্য গোয়েন্দারা বাউরি ও সঞ্জয়ের আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গার প্রিন্ট) সংগ্রহ করেছে বলেও জানা গেছে। 
তদন্তের স্বার্থে এই ঘটনায় যে সব অভিযুক্তদের আগেই সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দরকারে তাদেরকেও ফের একবার জেরা করা হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডি’এর এক আইপিএস কর্মকর্তা। 

প্রায় দুই সপ্তাহ আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই’এর হাতে আটক হয় প্রদীপ বাউরি। ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত বোলপুরের রুপ্পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন এই বাউরি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পদক চুরির সঙ্গে জড়িত অনেককেই তার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং অভিযুক্তদের রাজ্য থেকে পালাতেও সাহায্য করেছিলেন।   

নোবেল চুরির তদন্তে নেমে সিআইডি গোয়েন্দারা মহম্মদ হোসেন শিপুল নামে এক বাংলাদেশি নাগরিকেরও খোঁজ পেয়েছে। গোয়েন্দাদের ধারণা শিপুলই এই চুরির মূল চক্রী। পাশাপাশি ইউরোপের দুই নাগরিকও জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। এব্যাপারে ওই আইপিএস কর্তা জানান, আমরা ওই অভিযুক্তদের আটক করতে ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছি। 

এর আগে গত আগস্টে শান্তিনিকেতনে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা দিয়েছিলেন, সুযোগ পেলে সিআইডি দিয়ে এই চুরির তদন্ত করাবেন। এরপরই পদক খুঁজে পেতে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার, সিআইডি’এর অতিরিক্ত ডিজি রাজেশ কুমার ও সিআইডি’র আইজি জাভেদ শামিমকে নিয়ে এক বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছিল। 

প্রসঙ্গত, গীতাঞ্জলি কাব্যের জন্য ১৯১৩ সালে বাঙালির প্রথম নোবেল জয় এসেছিল বিশ্বকবির হাত ধরে। রবিঠাকুরের সেই পদকটি রাখা হয়েছিল তাঁর নিজের হাতে গড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বীরভূম জেলার শান্তিনিকতনের বিশ্বভারতীয় জাদুঘরে। কিন্তু নিরাপত্তার ঢিলেমিতে ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ রাতে জাদুঘর থেকে রহস্যজনক ভাবে নোবেল পদক সহ চুরি যায় কবির ব্যবহার করা বেশকিছু মুল্যবান জিনিস। এরপর বিষয়টি জানাজানি হতেই হইচই পড়ে যায়। তদন্তে নামে জেলা পুলিশ। পরে তদন্তে নামে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হারিয়ে যাওয়ার সেই পদক চুরির রহস্য উন্মোচন হয় নি। যদিও তার বদলে একটি রেপ্লিকা রাখা আছে জাদুঘরে। 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর