৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৮:০৯

'চা-ওয়ালা' থেকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পন্নিরসেলবম

অনলাইন ডেস্ক

'চা-ওয়ালা' থেকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পন্নিরসেলবম

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চা-ওয়ালা থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তা নিয়ে দেশটিতে গত লোকসভা ভোটের সময়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল। গুজরাটের একেবারে সাধারণ ঘর থেকে উঠে এসে একরকম সন্তদের জীবন পালন করা মোদি আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী। তামিলনাড়ুতেও খানিক একই ঘটনা ঘটেছে। নব্য মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে পাকাপাকিভাবে বসা পন্নিরসেলবমও চা বিক্রেতা ছিলেন একসময়ে। তবে মোদি যেমন চায়ের দোকানে কাজ করতেন তেমন পন্নিরসেলবমেরও নিজের চায়ের দোকান ছিল।

বছর ৬৫-র তামিলনাড়ুর নতুন এই মুখ্যমন্ত্রী OPS নামে জনপ্রিয়। তবে এই জনপ্রিয় নেতার উঠে আসার নেপথ্য কাহিনিটা অতটা সহজ ছিল না। পন্নিরসেলবমের অতীত জীবনে একবার উঁকি মারলেই বোঝা যাবে সেকথা।

এই মুহূর্তে দক্ষিণ ভারতে তেভর জাতির সবচেয়ে সফলতম ব্যক্তিত্বের নাম পন্নিরসেলবম। বাবার নাম ওট্টাকার তেভর। অষ্টম সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ছিলেন তিনি। কৃষক পরিবারে প্রথম সন্তানের নাম রাখা হয়েছিল পেচিমুথি। পরে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়  পন্নিরসেলবম। তামিলনাড়ুর পেরিয়াকুলামে জমিতে চাষাবাদ করেই দিন কাটত পরিবারের। বাবার মৃত্যুর পর তিনি একটি ডেয়ারি ফার্ম খোলেন। ক্রমে তার ব্যবসার পরিধি বাড়তে থাকে।

১৯৭০ সালে তিনি একটি চায়ের দোকান খোলেন তামিলনাড়ুর থেনি এলাকায়। নাম দেন পিভি ক্যান্টিন। বছর দশেক পর তিনি ওই চায়ের স্টলের দায়িত্ব তুলে দেন তার ভাইয়ের হাতে। তখন নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় রোজি ক্যান্টিন। সেখানেই ব্যবসায়িক জীবনের ইতি ঘটে। সিনে স্টার MGR-এর অনুরাগী পন্নিরসেলবম এরপর শুরু করেন তার রাজনৈতির জীবন।

MGR-এর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী জানকী রামাচন্দ্রনকে সমর্থন করেন OPS। কিন্তু যখন স্পষ্ট হয়ে যায় যে রাজ্যের পরবর্তী নেত্রী হতে চলেছেন জয়ললিতা। তখন OPS তাকে সমর্থন করে ধীরে ধীরে তার বিশ্বস্ত অনুচর হয়ে ওঠেন।

২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম মন্ত্রিসভায় স্থান পান পন্নিরসেলবম। জয়ললিতার মন্ত্রিসভায় তাকে রাজস্বদপ্তরের মন্ত্রী করা হয়। এরপর থেকে ক্রমেই 'আম্মা'র আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন তিনি। ২০১১ সালে তিনি অর্থ ও PWD দপ্তরের দায়িত্ব পান।

পরে দুর্নীতিতে জড়িয়ে যায় AIADMK নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার নাম। তখন তাকে পদত্যাগ করতে হয়। সেই দুর্দিনেও পন্নিরসেলবমের প্রতিই আস্থা রেখেছিলেন আম্মা। দলের পক্ষে তাকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হন ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে। দ্বিতীয়বার পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী হন ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে।

২০১৫ সালের ১১ মে মাসে কর্নাটকের বিশেষ আদালত দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস করে জয়ললিতাকে। ২৩ মে ফের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি। শেষবার মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকাকালীন দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় তাকে। তখন অস্থায়ী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন পন্নিরসেলবম। জয়ললিতার মৃত্যুর পর গতকাল রাতেই তিনি রাজ্যের স্থায়ী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন।

 

বিডি প্রতিদিন/৬ ডিসেম্বর ২০১৬/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর