আমেরিকার কথায় নয়, ভারতের চাপেই হাফিজ সাইদকে পাকিস্তান গৃহবন্দি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন হাফিজ সাইদের ভাই হাফিজ মাসুদ। একটি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের কাছেই এই মন্তব্য করেছেন লস্কর-ই-তৈবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাইদের ভাই। কিন্তু হাফিজের বন্দিত্বে তাঁর সংগঠনের কার্যকলাপ থেমে যায়নি বলেও দাবি করেছেন মাসুদ। পাক সরকারের তত্ত্বাবধানেই জামাত-উদ-দাওয়া পাকিস্তানে কাজ চালাচ্ছে বলে ওই সন্ত্রাসবাদী নেতার দাবি।
হাফিজ মাসুদ ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে টেলিফোন কথোপকথনে বলেছেন, ‘‘আমার ভাই এখন গৃহবন্দি...। তাঁর উপর এখন কড়া নজরদারি রয়েছে এবং তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে খুব দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।’’ অকারণে হাফিজ সাইদকে গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।
লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে হাফিজ সাইদের কোন সম্পর্ক নেই বলে মাসুদ দাবি করেছেন। তাঁরা শুধু জামাত-উদ-দাওয়া সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, লস্করের সঙ্গে তাঁদের কারও যোগাযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেছেন মাসুদ। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর সম্পর্কে মাসুদের আরও মন্তব্য, ‘‘লস্কর একটি কাশ্মীরি সংগঠন, আমাদের সঙ্গে ওই সংগঠনের কোনো যোগাযোগ নেই। ওই সংগঠন স্থানীয় মানুষই তৈরি করেছেন এবং সংগঠনটি সেখানেই (কাশ্মীরে) কাজ করে।’’ জামাত-উদ-দাওয়া একটি মানবতাবাদী সংগঠন বলেও হাফিজ মাসুদ দাবি করেন।মুম্বাই জঙ্গি হামলার মূল চক্রী হাফিজ সাইদ গত ৩০ জানুয়ারি গৃহবন্দি হয়েছেন। সে সময় পাকিস্তানপন্থী তথা ভারত-বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি দাবি করেছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাক সরকার। কিন্তু জঙ্গি সংগঠনগুলির সে ধারণা যে বদলে গিয়েছে, তা হাফিজ মাসুদের মন্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে গেছে।
সাইদের গৃহবন্দিত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা মনে করি, ভারতের চাপেই এটা করা হয়েছে। ভারত গোটা বিশ্বের কাছে একটা বার্তা পাঠাতে চায়, তারা কাশ্মীরের সমস্যাগুলোর দিক থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে চায়, হাফিজ সাইদ এবং পাকিস্তানের উপর সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে চায়, যাতে ওদের (ভারতের) সব অপকর্ম গোপন থাকে।’’ মাসুদ আরও বলেছেন, ‘‘এই সব কিছু ভারতের চাপেই ঘটেছে..., পাকিস্তানের সরকার ভারতের চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।’’
পাক সরকার ভারতের চাপের কাছে মাথা নত করে হাফিজ সাইদকে গৃহবন্দি করেছে বলে দাবি করলেও, পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেননি হাফিজ মাসুদ। তাঁর কথায়, ‘‘নওয়াজ শরিফের নিজস্ব কিছু অগ্রাধিকার রয়েছে। তিনি বন্ধুত্বের আশায় ভারতের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এটা তাঁর কৌশল, তিনি মনে করেন যে শান্তি এবং বন্ধুত্বের মধ্যে দিয়েই সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু পাকিস্তানের শান্তির বার্তার জবাবে ভারত ঔদ্ধত্য এবং হিংসা দেখিয়েছে, পাকিস্তান শান্তি স্থাপনের যে চেষ্টা করেছে, ভারত তাকে পাকিস্তানের দুর্বলতা বলে ভেবেছে।’’
বিডি প্রতিদিন/২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/হিমেল