ছোটখাটো একটা পুতুল। দিব্যি চলাফেরা করে, আবার কথাও বলে। রেকর্ড করা বেজে ওঠা কথা নয়, প্রশ্ন করলে উত্তর দেয় পুতুলটি। জনপ্রিয় এই পুতুলের নাম ‘মাই ফ্রেন্ড কায়লা’।
তবে এই পুতুলটি নাকি গুপ্তচরের কাজ করছে। এই আশঙ্কায় নড়েচড়ে বসেছে জার্মান সরকার। তারা অভিভাবকদের অনুরোধ করেছে, সব পুতুল নষ্ট করে ফেলতে হবে। জার্মানির টেলিকম সেবার উপর নজরদারি চালানো ফেডেরাল নেটওয়ার্ক এজেন্সি এই পরামর্শ দিয়েছে। আর তাদের এই আশঙ্কার মূলে রয়েছে পুতুলের প্রযুক্তি।
তাদের মতে, শহুরে বাবা–মায়েরা ছেলেমেয়েকে একা রেখেই কর্মস্থলে যান। তাদের নিঃসঙ্গতা ঘোচাতে কায়লা দেশে দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই পুতুল বাচ্চাদের প্রশ্নের জবাব দিতে পারে। আর এই পুতুলের মধ্যে একটি ব্লু টুথ বসানো থাকে। সেটির মাধ্যমে ইন্টারনেটের সঙ্গে জোড়া যায় পুতুলকে। তার মধ্যে থাকে মাইক্রোফোন ও স্পিকার। পুতুলটি ইন্টারনেট থেকে ৩৩ ফুট দূরত্বের মধ্যে থাকলেই কাজ করবে। নেট দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকা অবস্থায় পুতুলটি শিশুটির সঙ্গে কথা বলতে পারে।জার্মান প্রশাসনের বক্তব্য, এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ওই পুতুলের সফটওয়্যার ‘হ্যাক’ করা হচ্ছে। ফলে শিশুটির সঙ্গে কথোপকথনের সময় ব্যক্তিগত তথ্য পুতুলের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে হ্যাকারদের কাছে।
নজরদারি বা গুপ্তচরবৃত্তি রুখতে জার্মানির আইন খুবই কড়া। নাৎসি যুগে যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছিল, তার জেরে ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ বা নজরদারিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাই কায়লা পুতুল নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সে দেশের সরকার।
তবে পুতুলের নির্মাতা ‘জেনেসিস টয়েস’ এখন কোনও মন্তব্য করেনি। জার্মানিতে আশঙ্কা তৈরি হলেও ইউরোপের অন্যত্র ছবিটা এমন নয়। ব্রিটেনের টয় রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, এই পুতুল ব্যবহারে কোনও ঝুঁকি নেই।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-২