কুলভূষণ যাদবের সঙ্গে কেন ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের আশঙ্কা, কুলভূষণকে ইতিমধ্যেই হয়তো হত্যা করেছে পাকিস্তান। তাঁদের দাবি, পাকিস্তান এর আগেও একাধিকবার আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ পি কে সেহগল, কামার আঘার আশঙ্কা, কুলভূষণের উপর শারীরিক নির্যাতন করে তাঁকে হত্যা করতে পারে পাকিস্তান। সেই কুকীর্তি ঢাকতেই সম্ভবত ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সেহগাল বলছেন, “এই নিয়ে একটানা ১৬ বার ভারতীয় কনস্যুলেটের প্রস্তাব ফেরাল পাকিস্তান। এমনকী কুলভূষণের পরিবারকেও ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। বোঝাই যাচ্ছে, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় না পাকিস্তান। মানতে চায় না আন্তর্জাতিক আইন। এভাবে নিজেদের চরম কুকীর্তি ঢাকতে চায়।”আর এক কদম এগিয়ে আঘা বলছেন, সম্ভবত কুলভূষণকে ইতিমধ্যেই ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে পাকিস্তান। যাতে তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানের সব কুকীর্তিও ঢাকা পড়ে। গত একবছরে এই নিয়ে ১৬ বার কুলভূষণের সঙ্গে সাক্ষাতের ভারতের আর্জি ফিরিয়ে দিল পাকিস্তান।
অন্যদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই ইস্যুতে তারা কোনও সমঝোতার রাস্তায় যাবে না। অন্যদিকে, ভারত জানিয়ে দিয়েছে, প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিকের ন্যায় বিচারের জন্য যতদূর যেতে হয়, যাওয়া হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিদেশ সংক্রান্ত পরামর্শদাতা সরতাজ আজিজ বলেছেন, চরবৃত্তি, নাশকতা, অন্তর্ঘাতে দোষী সাব্যস্ত কুলভূষণ যাদবের বিচার হয়েছে আইন মেনেই। তাঁকে পাকিস্তানের সংবিধানের আওতায় প্রাপ্য আইনি অধিকার দিয়েই স্বচ্ছতার সঙ্গে বিচার হয়েছে। কুলভূষণের যথাযথ ন্যায়বিচার হয়নি বলে ভারতের তোলা অভিযোগ তিনি খারিজ করে দিয়েছেন। বরং, পাকিস্তানের সেনা আদালতে কুলভূষণের ফাঁসির আদেশ নিয়ে ঘোরতর সওয়াল করেছেন তিনি।
ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাই-কমিশনার গৌতম বাম্বাওয়ালে জানিয়েছেন, কুলভূষণের সাজার বিরুদ্ধে আইনি পথে হাঁটবে ভারত। তিনি সেনা আদালতে পেশ করা কুলভূষণের বিরুদ্ধে চার্জশিট এবং রায়ের কপি চেয়েছেন। সেই সঙ্গে হাই-কমিশনের আধিকারিকদের তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। যদিও ইসলামাবাদ সেই অনুরোধও রাখেনি।
অন্যদিকে, কুলভূষণ যাদবকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ফাঁসির সাজা শোনানোয় পাকিস্তানের সঙ্গে সবরকম দ্বিপাক্ষিক আলোচনা বাতিল করে ভারত। পাকিস্তানের সঙ্গে সামুদ্রিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সবরকম বৈঠক বাতিল করে কেন্দ্র। এমনিতেই, উরি হামলার পর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বাতিল হয়ে যায়। কেন্দ্র জানিয়ে দেয়, সীমান্তে যুদ্ধ ও দেশের অন্দরে বৈঠক একসঙ্গে চলতে পারে না। সমস্ত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে প্রতিবেশী দেশের নাগরিককে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে ইসলামাবাদ, অভিযোগ নয়াদিল্লির।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
বিডি প্রতিদিন/২৭ এপ্রিল, ২০১৭/ ই জাহান
