১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৬:২০

জলবায়ু পরিবর্তনে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে মেরু ভাল্লুক!

অনলাইন ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে মেরু ভাল্লুক!

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মেরু অঞ্চলে বরফ গলছে। ইতিমধ্যেই সেখানকার প্রাণীরা বড় ধরনের সঙ্কটে পড়েছে বলে বার বার সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞেরা। সম্প্রতি উত্তর মেরু অঞ্চলের পরিস্থিতির ছবি তুলতে সেখানে গিয়েছিলেন নেচার ফোটোগ্রাফার ও জীববিশেষজ্ঞ পল নিকলেন। কানাডার সমারসেট দ্বীপে একটি মেরু ভাল্লুক দেখে চমকে ওঠেন নিকলেন ও তাঁর সহযোগীরা। লোম ঝরে গিয়েছে তার। চেহারাও একেবারে রোগা। একটা মরচে ধরা খাবারের কৌটোয় খাবার খুঁজছিল ভাল্লুকটা। পরে একটা পড়ে থাকা স্নোমোবিল গাড়ির সিট চিবোতে শুরু করে। ৪০০ ফুট দূর থেকে ভাল্লুকটির ভিডিও তোলেন নিকলেন ও তার সহযোগীরা।

নিকলেন জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এই বিশেষ ভাল্লুকটির খাদ্যের অভাব হয়েছে কী না তা তাঁর জানা নেই। তবে মেরু ভাল্লুক ক্ষুধার্ত হলে তার চেহারাটা কেমন হয় সেটাই তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। ওই এলাকারই ব্যাফিন দ্বীপে নিকলেনের বাড়ি। তার কথায়, ‘‘এমন অবস্থায় কোন ভাল্লুককে কখনও দেখিনি।’’  নিকলেন ও ‘ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক’ পত্রিকার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ভালুকটির ছবি প্রকাশের পরে হইচই পড়ে যায়। 

বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, মেরু ভাল্লুক ক্রমশ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠছে। ২০১৫ সালেও একটি ক্ষুধার্ত ভাল্লুকের ছবি নিয়ে হইচই হয়েছিল। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রচারে একটি মেরু ভাল্লুকের কার্টুন ব্যবহার করেছিলেন সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাল গোর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মেরু এলাকার বরফ গলছে। ফলে মেরুভালুকের বাসস্থান ও শিকারের এলাকা কমছে। একটি মেরু ভাল্লুকের প্রতি সপ্তাহে একটি সিলের মাংসের সমান খাদ্যের প্রয়োজন হয়। খাদ্যের অভাব ঘটলে মেরু ভাল্লুকরা ওই এলাকায় (আর্কটিক সার্কল) বসবাসকারী মানুষের বসতিতেও হানা দিতে পারে।
ইনস্টাগ্রামে নিকলেনের ভিডিও-র দর্শকদের একাংশের অবশ্য দাবি, বয়স হলেও ভালুকের চেহারা খারাপ হয়ে যায়। আমেরিকার ওরেগন চিড়িয়াখানার অধিকর্তা এবং মেরু ভালুক বিশেষজ্ঞ ডোনাল্ড মুর জানিয়েছেন, ওই ভিডিও দেখে ভাল্লুকটির বয়স বোঝার উপায় নেই। তবে পরিবেশ পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব যে মেরু ভাল্লুককে সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তা মেনে নিয়েছেন তিনিও। নিকলেনকে অনেকে বলেছেন, শুধু ভিডিও তুলেই ছেড়ে দিলেন। ভাল্লুকটা বাঁচানোর চেষ্টা করলেন না।’’ তাঁর জবাব, আমরা তো আর ২০০-৩০০ পাউন্ড সিলের মাংস নিয়ে মেরু অঞ্চলে ঘোরাঘুরি করি না। আনন্দবাজার।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর