১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৬:৫০

ডোকালামে ফের অস্ত্র ও সেনা মজুত করছে চীন, তবে কিসের ইঙ্গিত?

অনলাইন ডেস্ক

ডোকালামে ফের অস্ত্র ও সেনা মজুত করছে চীন, তবে কিসের ইঙ্গিত?

ভারতের পক্ষ থেকে একদিকে সীমান্ত সমস্যা মেটাতে যেমন চীনের সঙ্গে আলোচনা চলছে, ঠিক তেমনই অন্যদিকে প্রতিবেশী কলম্বো এবং মালের কাছে প্রতিরক্ষার খাতিরে দিল্লি সহায়তাও চেয়েছে। 

এর মধ্যেই ডোকালামে শীতের সময়ে একটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আয়োজন করে ফেলেছে চীনা সেনাবাহিনী। এই ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে যাতে নতুন করে কোনও সমস্যা দেখা না দেয়, তার জন্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ চীনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছেন। ভারতের লক্ষ্য, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যগত সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখা। সে কারণে রাশিয়া ও চীন উভয় দেশের সঙ্গেই ভারত হালে একটি সমঝোতাও করেছে। 

সন্ত্রাস বিরোধিতার প্রশ্নে যদিও সেই যৌথ বিবৃতিতে লস্কর-ই-তোইবা এবং জয়েশ-ই-মহম্মদের কোনও উল্লেখ ছিল না। আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার বাণী সেখানে থাকলেও অদ্ভূতভাবে লস্কর-ই-তোইবা ও জয়েশ-ই-মহম্মদের সম্পর্কে তিন দেশই ছিল সরকারিভাবে নীরব। অন্তত ত্রিপাক্ষিক বিবৃতিতে এদের সম্পর্কে একটি শব্দও খরচ করা হয়নি।

ওই আলোচনা শেষ হতে না হতেই জানা গেল, ডোকালামে চীন আবার সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে। শীতের সময়টা ওই বিতর্কিত পয়েন্টে কাটাবে বলে পিপলস লিবারেশন আর্মির অন্তত ১৮০০ সেনা সেখানে ছাউনি ফেলেছে। শুধু তাই নয়, সাময়িকভাবে সাপ্লাই লাইন ঠিক রাখার জন্য তারা দুটি হেলিপ্যাড এবং রাস্তাও তৈরি করে ফেলেছে। অর্থাৎ, শান্তি বজায় রাখার জন্য চীনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার নিট ফল কিন্তু ওই দেশেরই রণসজ্জা। আর, সেটা শুধু সামরিকভাবে নয়, অন্যভাবেও।
 
ভারতের প্রতিবেশী দেশ নেপালে ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছে মাওবাদী পার্টির নেতৃত্বাধীন বামজোট। তাদের এই জয়ের পিছনে পুরোপুরিভাবেই বেজিংয়ের মদত কাজ করেছে। পাশাপাশি, ভারতের আর এক প্রতিবেশী রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে ৯৯ বছরের জন্য হেমবন্তটোটা বন্দরটি লিজ নিয়েছে চীন। 

এর পরেও দিল্লি আশা করছে, চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলার চীনা নীতি তারা মিষ্টি কথায় সামাল দিতে পারবে? প্রতিবেশীদের কাছে দিল্লি অনুরোধ জানাল, তোমরা দেখ যাতে আমাদের নৌ নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়, আর অমনি তারা সে কথা বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নিল- এই স্বপ্ন দেখলে বলতে হবে ভারতের নেতৃত্ব এখনও ছেলে ভুলানো রূপকথার যুগে পড়ে রয়েছেন।

লালচীনের মিথ্যাচারে ভুলেছিলেন বলেই জওহরলাল নেহরুকে ১৯৬২ সালে মাও সে-তুংদের হানাদারির মুখে পড়তে হয়েছিল। সেই শিক্ষা যে আদতে কাজে লাগেনি সেটা ভারতের ইদানীংকার নেতৃত্বের কার্যকলাপ থেকেই পরিষ্কার। তারা এখনও চীনের 'সদিচ্ছা' এবং 'সুবিবেচনা'র উপর ভরসা রাখছেন। যদিও তারা বুঝতে পারছেন না যে, যাদের মুখের দিকে তারা তাকিয়ে আছেন চীনের সঙ্গে মোকাবিলার সময় তারা ভারতের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তার কারণ, চীনের সঙ্গে এঁটে ওঠার ক্ষমতা তাদের নেই। উল্টে, তারা নিজেরাই চীনের কাছে বিকিয়ে গেছে।

বিডি প্রতিদিন/১৭ ডিসেম্বর ২০১৭/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর