২৪ মার্চ, ২০১৮ ১৪:৫৩

রাজ্যসভায় শক্তি বাড়ল মোদির

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

রাজ্যসভায় শক্তি বাড়ল মোদির

ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় নিজেদের শক্তি বাড়ালো ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। এতদিন পর্যন্ত রাজ্যসভায় এককভাবে বিজেপির ৫৮ জন সংসদ সদস্য ছিল। উচ্চকক্ষে সংখ্যার বিচারে বিজেপি’ই ছিল বৃহত্তম দল। আর বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)-এর সদস্য সংখ্যা ছিল ৭৫ জন। কিন্তু শুক্রবারের নির্বাচনের ফলাফলের পর রাজ্যসভায় তাদের সদস্য বেড়ে দাঁড়ালো ৮৬, এর মধ্যে বিজেপি’র একাই ৬৮ জন সাংসদ রয়েছেন (জোট শরিক দলগুলির মধ্যে জনতা দল ইউনাইটেড-৬, শিবসেনা-৩, এসএডি-৩, পিডিপি-২, আরপিআই(এ)-১, এসডিএফ-১, বিপিএফ-১, এনপিএফ-১)। সবমিলিয়ে রাজ্যসভায় এনডিএ জোটের শক্তিই বাড়লো। যা বিজেপি শিবিরের কাছে অত্যন্ত ইতিবাচক। তবে এই আসন সংখ্যা বৃদ্ধিতেও রাজ্যসভায় বিজেপির এখনও পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ রাজ্যসভায় মোট সদস্য সংখ্যা ২৪৫টি। এর মধ্যে ২৩৩ জন নির্বাচিত, বাকী ১২ জন মনোনীত। রাজ্যসভায় কোনো জোট বা দলের গরিষ্ঠতার জন্য দরকার ১২৬ সদস্য। অবশ্য আগামীদিনে আরও কিছু রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতাদখল করলে সেক্ষেত্রে বিধায়ক সংখ্যা বাড়লে পরবর্তীতে হয়তো ম্যাজিক ফিগারের কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব হবে। আর সেই ম্যাজিক ফিগার একবার পৌঁছতে পারলে বিজেপি রাজ্যসভা ও লোকসভায় অসীম ক্ষমতাধর হয়ে উঠবে।

অন্যদিকে, রাজ্যসভায় দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হল কংগ্রেস। তাদের এককভাবে সাংসদ রয়েছেন ৫৪ জন, ইউপিএ জোটের শরিক দলগুলির ১৪ (আরজেডি-৫, এনসিপি-৪, ডিএমকে-৪, আইইউএমএল-১) জন সদস্য নিয়ে ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) জোটের মোট আসন ৬৮। 

উচ্চকক্ষে বামদের সংখ্যা ৭ (সিপিআইএম-৫, সিপিআই-১, বিদ্রোহী জনতা দল ইউনাইটেড-১)। অন্য দলগুলির মধ্যে রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেস-১৩, এআইএডিএমকে-১৩, এসপি-১১, বহুজন সমাজ পার্টি-৪, বিজেডি-৯, টিডিপি-৬, টিআরএস-৬, আপ-৩, আইএনএলডি-১, কেরলা কংগ্রেস(এম)-১, ওয়াইএসআর কংগ্রেস-২, এবং জনতা দল (সেকুলার)-১টি আসন রয়েছে। 
 
আগামী এপ্রিলে ভারতের ১৬ রাজ্যের রাজ্যসভার ৫৮ আসন শূন্য হবে। এর মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (১০), মহারাষ্ট্র (৬), বিহার (৬), পশ্চিমবঙ্গ (৫), মধ্যপ্রদেশ (৫), গুজরাট (৪), কর্নাটক (৪), অন্ধ্রপ্রদেশ (৩), তেলেঙ্গানা (৩), রাজস্থান (৩), ওড়িষ্যা (৩), ঝাড়খন্ড (২), ছত্রিশগড় (১), হরিয়ানা (১), হিমাচলপ্রদেশ (১) এবং উত্তরাখন্ড (১)। 
এর মধ্যে গত ১৫ মার্চ ১০টি রাজ্যের ৩৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যসভায় জয়ী হয়েছেন, যার মধ্যে ছিলেন ধর্মেন্দ্র প্রধান, রবি শঙ্কর প্রসাদ, প্রকাশ জাভড়েকরসহ সাত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, কর্নাটক, ঝাড়খন্ড, ছত্রিশগড় ও তেলেঙ্গানার বাকী ২৫ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করতেই গতকাল শুক্রবার ভোট গ্রহণ হয়। সকাল নয়টা থেকে শুরু হয় ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া, চলে বিকাল চারটা পর্যন্ত। এরপর পাঁচটায় শুরু হয় ভোট গণনা, যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। 

এই ৫৮ আসনের মধ্যে বিজেপি জেতে ২৮টি আসনে, কংগ্রেস ১০টি, তৃণমূল কংগ্রেস ৪টি আসনে জয়ী হয়। টিআরএস ও বিজেপি ৩টি করে, জেডিইউ, টিডিপি, আরজেডি ২টি করে, সমাজবাদী পার্টি, শিবসেনা, এনসিপি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেস ১টি করে আসনে জয়লাভ করেছে। 

পশ্চিমবঙ্গ থকে রাজ্যসভার পাঁচটি খালি আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। এই চারজন হলেন ডা. শান্তনু সেন, শুভাশিস চক্রবর্তী, আবির বিশ্বাস ও নাদিমূল হক। কিন্তু পঞ্চম আসনে কংগ্রেস ও সিপিআইএম আলাদা আলাদা করে প্রার্থী দেওয়ায় এই আসনটিতে নির্বাচন জরুরি হয়ে পড়ে। প্রত্যেক প্রার্থীকে জিততে কমপক্ষে ৪৯টি ভোট প্রয়োজন ছিল। যেটা কংগ্রেস বা বামফ্রন্ট কারও কাছেই ছিল না। তবে কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি-কে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সমর্থন দেওয়ায় পঞ্চম আসনে তিনিই জয়ী হন। পরাজিত হন সিপিআইএম প্রার্থী রবীন দেব। 

বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ মার্চ, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর