২০ এপ্রিল, ২০১৮ ২১:৩৭

বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন লাগানোর অভিযোগ

ট্যুইট খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু দিল্লি পুলিশের

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন লাগানোর অভিযোগ

ভারতের রাজধানী দিল্লির একটি রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপি’র এক যুব নেতার বিরুদ্ধে। ট্যুইট করে নিজেই আগুন লাগানোর দায় স্বীকার করেছেন মণীশ চান্ডেলা নামে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের যুব সংগঠনের ওই প্রভাবশালী নেতা। 

গত ১৪ ও ১৫ এপ্রিলের মধ্যবর্তী কোন একটি সময়ে দক্ষিণ দিল্লির কালিন্দি কুঞ্জ এলাকায় রোহিঙ্গা শিবিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ওই শিবিরটিতে প্রায় ২৩০ জন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু বসবাস করতেন বলে জানা যায়। তারা কেউ হতাহত না হলেও ওই আগুনে ৫০ টি ঝুপড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অনেকেরই জাতিসংঘের পক্ষে দেওয়া বিশেষ শরণার্থী কার্ড হারিয়ে যায়। ওই ঘটনার পর ১৫ তারিখ ভোরে একটি ট্যুইটে আগুন লাগানোর কথা স্বীকার করে বিজেপির ওই যুব সংগঠনের নেতা। তিনি জানান ‘হ্যাঁ, আমরাই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ঘর পুড়িয়েছি। ‘আমাদের হিরোরা দারুন ভাল কাজ করেছে’। 

এরপর গত ১৬ এপ্রিল ফের ট্যুইটে আগুন লাগানোর বিষয়টি স্বীকার করেন। ‘হ্যাসট্যাগ রোহিঙ্গা কুইট ইন্ডিয়া’ দিয়ে তিনি লেখেন 'হ্যা আমরাই এই কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতেও করবো।'

বিষয়টি সামনে আসতেই সোরগোল পড়ে যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানায় ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিস-ই-মুশাবরাত’ (এআইএমএমএম) সহ কয়েকটি সংগঠন। 

এআইএমএমএম-এর পক্ষ থেকে দিল্লির পুলিশ কমিশনার অমুল্য পট্টনায়েক’কে চিঠি লিখে চান্ডেলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন। অন্যদিকে ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে গতকাল দিল্লির থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট প্রশান্ত ভুষণ। চান্ডেলার ট্যুইটের একটি স্ক্রিনশটও অভিযোগ পত্রের সাথে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়। পুলিশি নিষ্ক্রীয়তার অভিযোগ তুলে প্রশান্ত ট্যুইট করে জানান ‘দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে আটক করার ব্যাপারে কোন উদ্যোগই নেওয়া হল না এবং বিজেপির পক্ষ থেকেও চান্ডেলাকে বহিষ্কারের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হল না’। 

যদিও বিতর্ক ওঠার পরই নিজের ট্যুইটটি মুছে ফেলেন মণীশ চান্ডেলা। ইতিমধ্যেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। 

দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার চিন্ময় বিশওয়াল জানান, ‘তদন্তের সবদিক খোলা রয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির ট্যুইটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু জিনিস পরীক্ষা করে দেখছি’। 

উল্লেখ্য, গত বছরের আগষ্টে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে নতুন করে সহিংসতা তৈরি হওয়ায় প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। ভারতেও আশ্রয় নিয়েছে কয়েক হাজার। সবমিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। কিন্তু দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এই রোহিঙ্গাদের দেশে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রের বক্তব্য ‘রোহিঙ্গা দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় হুমকি, তাই তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে’।


বিডি প্রতিদিন/২০ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর