১৯ জুন, ২০১৮ ১০:১৫

যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি তালেবানদের

অনলাইন ডেস্ক

যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি তালেবানদের

আফগানিস্তানে তালেবানের সঙ্গে তিনদিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও ১০ দিন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে আফগান সরকার। কিন্তু যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তালেবান।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আফগানিস্তানে ২০০১ সালে মার্কিন অভিযান শুরুর পর কয়েক দিন আগে সরকার ও তালেবান প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে।  গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এ চুক্তি শেষ হয় গত রবিবার।

এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির এক মুখপাত্র টুইটারে জানান, সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ১০ দিন বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তালেবানের মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে রবিবার বলেন, ‘আজ (রবিবার) রাতে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হবে এবং আমাদের অভিযান ফের শুরু হবে। যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর কোনো চিন্তা আমাদের নেই।’

তালেবানের এ ঘোষণা অনেক বেসামরিক আফগানের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। কারণ যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে তালেবানের অনেক যোদ্ধা রাজধানী কাবুলসহ আশপাশের অনেক শহরে ঢুকে পড়েছে। এবং যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তারা এসব শহরে অবস্থান করছে।

তালেবানের সঙ্গে সরকারের তিন দিনের ঐতিহাসিক যুদ্ধবিরতির বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়সহ অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছিলেন। কারণ এ যুদ্ধবিরতির ফলে ঈদুল ফিতরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একসঙ্গে তালেবান যোদ্ধা ও সরকারি সেনাদের অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। এমনকি তাঁদের অনেকে সেলফিও তোলেন। অন্যদিকে বেসমারিক লোকজন তিক্ততা ভুলে বরণ করে নেন অনেক তালেবান যোদ্ধাকে। যুদ্ধবিরতির এ তিন দিনে যে সৌহার্দপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে অনেকেই যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে শান্তির স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন।

বিভিন্ন শহরে তালেবান যোদ্ধা প্রবেশের ঘটনায় উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন অনেকে। মোহাম্মাদ সাবের নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কাবুলের রাস্তায় অনেক অচেনা মুখ চোখে পড়ছে। এ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। তবে আশা করব, কেউ কোনো ধরনের চাতুরি করবে না।’

কারগার নামের একজন লিখেছেন ‘একটা কথা শোনা যাচ্ছে। তালেবানের অনেক যোদ্ধা নাকি কাবুলে প্রবেশ করেছে এবং এদের মধ্যে থেকে মাত্র কয়েকজন চলে গেছে। কাবুলের পুলিশ কি আমাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারবে?’

এদিকে এ পরিস্থিতির মধ্যে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় নানগরহর প্রদেশে পর পর দুই দিন আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। গত শনিবার ও রবিবারের ওই হামলায় অন্তত ৫৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। হতাহতদের মধ্যে বেসামরিক লোকজনের পাশাপাশি সরকারি সেনা ও তালেবানের যোদ্ধাও রয়েছে।

ওই প্রদেশের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পরিচালক নাজিবুল্লাহ কামাওয়াল জানান, রবিবারের হামলাটি হয় প্রাদেশিক গভর্নরের কার্যালয়ের পাশেই। ওই কার্যালয়ে ঈদুল ফিতরের এক অনুষ্ঠানে তালেবান ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠান শেষে ফেরার সময় আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়।

উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে ২০১৪ সালে আত্মপ্রকাশের পর থেকে আইএস কয়েক শ মানুষকে হত্যা করেছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় আইএস তালেবানের বিরুদ্ধেও লড়াই করে।

বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর