১৯ জুন, ২০১৮ ১৭:২৩

কাশ্মীরে জোট সরকার ছাড়ল বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবার পদত্যাগ

নতুন করে নির্বাচনের দাবি বিরোধীদের

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

কাশ্মীরে জোট সরকার ছাড়ল বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবার পদত্যাগ

নরেন্দ্র মোদির বিজেপির সাথে জোট বেঁধে এতদিন কাশ্মীরে জোট সরকারের নেতৃত্বে ছিলেন পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) মেহবুবা মুফতি।

জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিলেন পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (পিডিপি) প্রধান মেহেবুবা মুফতি। তিনি রাজ্যটির পিডিপি-বিজেপি জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী। উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দুই জোট শরিক দলের মত পার্থক্যের কারণেই মঙ্গলবার বিকালে সরকারের ওপর থেকে বিজেপি তার সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা দেন পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা। সেক্ষেত্রে সাড়ে তিন বছরের মাথায় জোট সরকার ভেঙে গেল। 

উল্লেখ্য পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে জম্মু-কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় ভারত। গত মে মাসে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে ট্যুইট বার্তায় যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দিয়ে জানানো হয় শান্তিপ্রিয় মুসলিমদের সুষ্ঠুভাবে রোজা পালন করার সুযোগ দিতেই এই যুদ্ধবিরতি। তবে আক্রান্ত হলে বা নিরাপরাধ মানুষের জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অভিযান চালানোর অধিকার থাকবে নিরাপত্তা বাহিনীর। রমজান মাস শেষে রবিবার ভারত সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধ বিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু কাশ্মীরের জোট সরকারের শরিক দল পিডিপি যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার পক্ষে। কিন্তু কেন্দ্র নারাজ। এরই পরই বিজেপির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় পিডিপি’এর সাথে পথ চলা অসম্ভব। এছাড়াও একাধিক ইস্যুতে দুই দলের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। মঙ্গলবারই সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে জম্মু-কাশ্মীরের বিজেপি মন্ত্রীদের সাথে দিল্লিতে বৈঠকে বসেন অমিত শাহ। সেই বৈঠকের পরই আনুষ্ঠানিক ভাবে জোট সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষনা দেয় বিজেপি। পরে রাজ্যপাল এন.এন.ভোরার কাছে রাম মাধব চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য রাজ্যপালকে নিজ হাতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। 

দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপির মুখপাত্র রাম মধাব জানান ‘পিডিপি’এর সাথে আর পথ চলা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা সমর্থন তুলে নিচ্ছি’। বিজেপির তরফে এই ঘোষণা দেওয়ার পরই সঙ্কটে পড়ে মুফতির সরকার। এরপর সময় গড়াতেই বিকালেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন মেহেবুবা মুফতি। তিনি তার পদত্যাগ পত্র রাজ্যপাল এন.এন.ভোরার কাছে পাঠিয়ে দেন। এদিকে ইস্তফার পরই কেন্দ্রকে তোপ দেগেছেন মেহেবুবা। তাঁর অভিযোগ কাশ্মীরকে শত্রু বলে মনে করে কেন্দ্র। 

বিজেপির অভিমত ‘উপত্যকায় সন্ত্রাস, সহিংসতা ও জেহাদি কার্যকলাপ বেড়েছে। কাশ্মীরের মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। ‘রাইজিং কাশ্মীর’ পত্রিকার সম্পাদক সুজাত বুখারির হত্যাই তার উদাহরণ’। 

এদিকে মেহেবুবার ইস্তফার রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরির মধ্যেই আছড়ে নেমে পড়েছে বিরোধীরা। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে উপত্যকায় নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন রাজ্যটির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনপারেন্স (এনসি) নেতা ওমর আবদুল্লা। ৮৯ বিধায়ক বিশিষ্ট জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ৪৫। সেখানে এনসি হল তৃতীয় বৃহত্তম দল, তাদের বিধায়ক রয়েছে ১৫। 

অন্যদিকে পিডিপির বিধায়ক সংখ্যা ২৮, দ্বিতীয় বৃহত্তম দল বিজেপির রয়েছে ২৫ বিধায়ক। কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা মাত্র ১২, যদিও তারা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে পিডিপি’র সাথে জোট সরকারে যেতে রাজি নয়। 


বিডি-প্রতিদিন/১৯ জুন, ২০১৮/মাহবুব/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর