২০ জুলাই, ২০১৮ ২০:৪৮

লোকসভায় কঠোর সমালোচনার পর মোদিকে আলিঙ্গন রাহুলের

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

লোকসভায় কঠোর সমালোচনার পর মোদিকে আলিঙ্গন রাহুলের

ভারতের লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তুলোধুনোর পর আলিঙ্গন করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। শুক্রবার লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে রাহুল বলেন, ‘পুরো দেশ দেখছে যে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে আমি স্পষ্ট কথা বলেছি, কিন্তু উনি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারছেন না। এটাই সত্যি। আমি লক্ষ্য করছিলাম যে উুনি কখনও এদিকে তাকাচ্ছেন, আবার কখনও ওদিকে তাকাচ্ছেন’। তাঁর (মোদি) বক্তব্যে দেশ বুঝে গেছে যে নরেন্দ্র মোদি আসলে পাহারাদার নয়, উনি হলেন ভাগীদার (দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সঙ্গী)’।  

লোকসভায় অনাস্থা ভোটের আগে এদিন প্রধানমন্ত্রীকে ‘অল আউট অ্যাটাক’এ যান কংগ্রেস সভাপতি। গণপিটুনি থেকে শুরু করে বেকারত্ব, নোট বাতিল, নারী-দলিতদের সুরক্ষা, কৃষকদের সমস্যা, রাফায়েল বিমান চুক্তি-সব ইস্যুতেই মোদি ও তার নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে তীব্র নিশানা করতে থাকেন রাহুল। রাহুলের বক্তব্যের মধ্যেই চরম হট্টগোল শুরু হলে লোকসভার অধিবেশন কিছুক্ষণের জন্য মুলতবি থাকে। 

দেশের পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তোপ দেগে রাহুল বলেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্টের সাথে গুজরাটে মোদি যখন দোলনায় চড়ছিলেন তখনই চীনা সেনা ভারতে প্রবেশ করে। এরপর চীনের প্রেসিডেন্ট নিজ দেশে ফিরে যান। কিন্তু চীনের সেনাকে ডোকলামে রেখে যায় এবং সেখানে দাপিয়ে বেড়ায়। যদিও ভারতীয় সেনা ডোকালামে চীনকে জবাব দিয়েছে। এর কয়েকদিন পর মোদিজি চীন সফরে গেলে ডোকালাম ইস্যুতে একটি কথাও বলেন নি। আমাদের সেনারা যে কাজ করছে, প্রধানমন্ত্রী তা করতে পারেন নি’।

রাহুলের অভিযোগ, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশের কৃষক, শ্রমিকদের মনের কথা শুনতে পান না। তিনি কেবল বিত্তবানেদের নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। কৃষকদের ঋণ মওকুফ হবে না কিন্তু বিত্তবানেদের আড়াই লাখ কোটি রুপির ঋণ মওকুফ করেছেন’। 

রাহুলের দাবি দেশের নারী, সংখ্যালঘু, দলিত, আদিবাসী কেউই সুরক্ষিত নয়। দেশের নারীদের রক্ষা করতে পারছে না ভারত। অথচ এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নীরব রয়েছেন। 

ফ্রান্সের সাথে ভারতের রাফায়েল চুক্তি নিয়েও দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণকে তোপ দাগেন রাহুল। তাঁর অভিযোগ ‘এক ব্যবসায়ীকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ের দেওয়ার জন্য ফ্রান্সের সাথে এই চুক্তি হয়েছে। যার কারণেই রাফায়েল’র দাম বলতে পারছেন না। দুর্নীতি লুকাতেই দাম বলা হচ্ছে না’।  

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে সহিষ্ণুতার বার্তা দিয়ে রাহুল বলেন ‘আপনাদের মধ্যে আমার প্রতি ঘৃণা থাকতে পারে, আপনারা আমাকে পাপ্পু বলতে পারেন, খারাপ কথা বলতে পারেন কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে আমার কোন ঘৃণা নেই। আমি আপনার কাছ থেকে এই ঘৃণা সরিয়ে একে ভালবাসায় পরিণত করবো’। 

বক্তব্য শেষেই প্রধানমন্ত্রীকে সৌজন্য দেখাতে ভোলেননি রাহুল। নিজের বিরোধী আসন থেকে উঠে এসে প্রধানমন্ত্রীকে বুকে জড়িয়ে ধরেন রাহুল গান্ধী। রাহুলের এই আচরণে প্রাথমিকভাবে কিছুটা স্তম্ভিত হয়ে যান মোদি, পরে রাহুলকে কাছে ডেকে নিয়ে ফের তাঁর সাথে হাত মেলান মোদি। 


বিডি প্রতিদিন/২০ জুলাই ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর