১৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০৪:০৭

খাশোগিকে স্বামী দাবি মিসরীয় নারীর!

অনলাইন ডেস্ক

খাশোগিকে স্বামী দাবি মিসরীয় নারীর!

ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর গত ২ অক্টোবর খুন হন ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের একজন সমালোচক জামাল খাশোগি। খাশোগি নিহত হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় রীতি অনুসারে এক মিসরীয় নারীকে বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেছেন ওই নারী। শনিবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ খবর প্রচার করেছে।

খবরে বলা হয়েছে, মিসরীয় ওই নারীকে বিয়ে করার কথা নিজের পরিবার ও তুর্কি বাগদত্তার কাছে গোপন রেখেছিলেন খাশোগি। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে ওই নারী জানান, একজন মুসলিম নারী হিসেবে আমি নিজের পূর্ণ অধিকার ও স্বীকৃতির দাবিতেই খাশোগির সঙ্গে সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছি। 
এই বিয়ের ব্যাপারে খাশোগির তুর্কি বাগদত্তা খাদিজা সেনগিজ বলেছেন, তিনি এ বিয়ের বিষয়ে কিছুই জানেন না। খাশোগির সুনাম নষ্ট করতেই এমনটা করা হচ্ছে বলেও মনে করেন তুর্কি বাগদত্তা খাদিজা।

এদিকে, সৌদি আরবের এক সরকারি কৌঁসুলি সম্প্রতি বলছেন, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান নন, ইস্তাম্বুলের কনস্যুলেটের ভেতর সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তাটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল খাশোগিরকে বুঝিয়ে সৌদি আরবে ফিরিয়ে আনার। তিনি আরো বলেন, খাশোগির সাথে ধস্তাধস্তি হবার পর তাকে বিষাক্ত ইনজেকশন দেওয়া হয়।

সরকারি কৌঁসুলি এই হত্যার ঘটনায় ১১ জনকে অভিযুক্ত করেছেন এবং তাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেছেন। মামলাটি একটি আদালতে পাঠানো হয়েছে, এবং একই সঙ্গে সন্দেহভাজন আরও দশজনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর সালান বিন রাজিহ সালান বলেছেন, খাশোগির মৃত্যুর পর তার দেহ দূতাবাসের ভেতর খণ্ড খণ্ড করে ফেলা হয়। এরপর তার দেহের বিভিন্ন অংশ কনস্যুলেটের বাইরে স্থানীয় একজন 'সহযোগী'র কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেই সহযোগীর একটি স্কেচ তৈরি করা হয়েছে এবং দেহাবশেষের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

তবে হত্যার দায়ে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের কারো নাম পরিচয় প্রকাশ করেননি সালান। তবে তিনি জানান, তদন্তে জানা গেছে যে ব্যক্তি খুনের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনিই দলটির মধ্যে আলোচনাকারী হিসেবে মুখ্য ভূমিকা পালন করছিলেন।

উপ-গোয়েন্দা প্রধান জেনারেল আহমেদ আল আসিরি তাকে ইস্তাম্বুলে পাঠিয়েছিলেন, যার উদ্দেশ্য ছিল খাশোগিকে তার স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে সৌদি আরবে ফিরে যেতে বাধ্য করা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সৌদি যুবরাজ এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।

বাদশাহ সালমানের পুত্র এবং কার্যত সৌদি আরবের শাসনকাজ পরিচালনাকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এই হত্যাকাণ্ডের সাথে তার কোনরকম সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন। তবে সমালোচকরা মনে করছেন, এ ধরনের একটি ঘটনা সম্পর্কে যুবরাজ মোহাম্মদ কিছুই জানতেন না তেমনটি হওয়া খুবই অসম্ভব।

সমালোচকরা মনে করেন, সৌদি যুবরাজ খাশোগি হত্যা সম্পর্কে কিছু জানতেন না এটা সম্ভব নয়। তুর্কি কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন যে - খুনের কয়েকঘণ্টা আগে যে ১৫ জন সৌদি এজেন্ট ইস্তাম্বুল এসেছিল- তাদের সাথে হাড় কাটার করাত ছিল, এবং তাদের একজন ছিলেন সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত একজন ফরেনসিক প্যাথলজিস্ট।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেছেন, "সৌদি কর্তৃপক্ষ যেটি বলুক না কেন, খাশোগি হত্যার নির্দেশ সৌদি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই এসেছে" - তবে তিনি বিশ্বাস করেন যুবরাজ সালমান সেটি করেননি।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর