১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০৬:২১
খবর আনন্দবাজারের

প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংহেকে শপথবাক্য পড়ালেন সিরিসেনাই!

অনলাইন ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংহেকে শপথবাক্য পড়ালেন সিরিসেনাই!

সংগৃহীত ছবি

একান্ন দিনের নাটকে যবনিকা। ফের শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) প্রধান ৬৯ বছরের রনিল বিক্রমসিংহে। তাকে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিলেন দেশের প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। যিনি মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেও জনসভায় বলেছিলেন, তার জমানায় রনিলকে আর কিছুতেই প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতে দেবেন না। 

রনিলের হাতে আজ নিয়োগপত্র তুলে দেয়ার সময় বেশ অপ্রস্তুত দেখাচ্ছিল সিরিসেনাকে। মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করলেও উদ্বেগ চাপা রাখতে পারেননি তিনি। বরং সৌজন্য দেখিয়েছেন রনিল। এ দিন শপথ নেওয়ার পরে সব তিক্ততা সরিয়ে রেখে বলেছেন, এটা আমার বা দলের জয় নয়। এই জয় শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্রের। দেশের সার্বভৌমত্বের জয়। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে, সংবিধানকে মান্যতা দিতে যারা পাশে ছিলেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ।’

এদিন রবিবার সকালে শপথের পর্ব শেষ হতেই রাস্তায় নেমে পড়েন রনিলের সমর্থকেরা। নাচে-গানে উৎসব শুরু হয়ে যায়। ইউএনপি অবশ্য আগেই জানিয়েছিল, এত কিছুর পরেও তারা সিরিসেনার ছত্রছায়ায় সরকার চালাতে রাজি। এ দিন দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা সাজিথ প্রেমাদাস জানান, প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও সিরিসেনা যে শেষমেশ রনিলকে প্রধানমন্ত্রী পদে মেনে নিলেন, তাতে মোটেও অবাক হননি তিনি। তার কথায়, ‘যারা দেশের ঐক্য নষ্ট করতে চায়, প্রেসিডেন্টকে তারা ভুল পথে চালিত করছিল। এবার সত্যিটা সামনে এসেছে। সিরিসেনার সঙ্গে মিলেমিশে ফের কাজ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে দল।’ 

রনিল এবার নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। দলীয় সূত্রের খবর, ২০১৯-এর বাজেটকে সামনে রেখে কালই নতুন মন্ত্রিসভার ঘোষণা হতে পারে। এবার ৩০ সদস্যের মন্ত্রিসভা গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ৫১ দিনের রাজনৈতিক সঙ্কটে যারা রনিলকে সমর্থন জুগিয়েছেন, সেই শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির কয়েক জনকেও মন্ত্রিসভায় শামিল করা হতে পারে। 

২৬ অক্টোবর রনিলকে সরিয়ে নিজের পছন্দের মাহিন্দা রাজাপক্ষকে প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। হার মানেননি রনিল। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন নিয়ে রাজাপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানান। পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে ভোটের দিন ঘোষণা করে পাল্টা চাল দেন সিরিসেনা। কিন্তু সময়ের আগে পার্লামেন্ট ভাঙার এই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি নিম্ন আদালত রাজাপক্ষকে প্রধানমন্ত্রীর গদি আঁকড়ে না থাকার যে নির্দেশ দিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট তার উপরে স্থগিতাদেশ দেবে না বলে জানিয়ে দেয়।

জোড়া ধাক্কায় ঘায়েল হয়ে গতকাল সরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজাপক্ষ। রনিলকে ফের প্রধানমন্ত্রী পদে মেনে নিয়ে কার্যত হার স্বীকার করলেন সিরিসেনা।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর