১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১৯:২৯
কাশ্মীরে হামলা

বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্যদের কেন আকাশপথে নেয়া হয়নি?

অনলাইন ডেস্ক

বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্যদের কেন আকাশপথে নেয়া হয়নি?

কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে ভারতীয় সেনাবহরে জঙ্গি হামলায় ৪৪ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হয়েছে। এ হামলায় আহত হন আরও অনেকে। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জম্মু কাশ্মীরের এই জঙ্গি হামলা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।  

তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এবারের হামলাকে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা বলা হচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী সংগঠন জয়েশ-ই-মোহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। 

হামলার পর বিস্ফোরণস্থল পর্যবেক্ষণ করেছে করেছে দেশটির সন্ত্রাসদমন কম্যান্ডো বাহিনী, ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড এবং এনআইএ। বিস্ফোরণে ব্যাপক প্রাণহানির পর দেশটির গোয়েন্দাবাহিনীর ব্যর্থতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

কীভাবে হামলা হয় সেনাদের ওপর?

সিআরপিএফ হচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী। বৃহস্পতিবার বিকালের বাহিনীটির প্রায় আড়াই হাজার সদস্য ৭৮টি ট্রাক আর বাসে করে জম্মু থেকে শ্রীনগরে যাচ্ছিলেন। পথে পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপুরার কাছে লেথপোড়া নামক জায়গায় পৌঁছলে তাদের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা।

জানা গেছে, ফিল্মি স্টাইলে ভারতীয় সেনাদের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। প্রথমে তারা আইইডি বিস্ফোরক ভর্তি একটি ‘সেডন গাড়ি’ সেনাবহরের ভেতরে ঢুকিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়। সিআরপিএফ জানায়, সরাসরি জওয়ান বোঝাই বাসে ধাক্কা মারেনি ওই ঘাতক। বরং রাস্তার বাঁ দিক ধরে যাওয়া বহরের ৭৮টি বাসের পাশ কাটিয়ে ৫৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের একটি বাসের কাছে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়। এর সঙ্গে সঙ্গেই আশপাশ থেকে বেরিয়ে আসে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া জঙ্গিরা। ভারতের সেনাদের লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো গুলি চালাতে থাকে তারা।

যে বাসটিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় সেটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এরপর সেখান থেকেই বহরের অন্য গাড়িগুলোতে গুলি চালায় জঙ্গিরা।

হামলা ব্যবহার করা হয়েছিল ৬০ কিলোগ্রাম ওজনের অত্যন্ত শক্তিশালী আরডিএক্স বিস্ফোরক। বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, এক সেনার দেহ ছিটকে ৮০ মিটার দূরে পড়ে। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণের পর আরডিএক্স  ছড়িয়ে পড়েছিল অন্তত ১৫০ মিটার এলাকাজুড়ে, জানিয়েছে সিআরপিএফ।

হামলার পর ঘটনাস্থলের কিছু চিত্র সংগ্রহ করেছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা। এসব চিত্রে যে আকারের গর্ত দেখা যাচ্ছে, তা দেখে বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্ভবত শুধু গুলি নয়, রকেটচালিত গ্রেনেড বা আরপিজিও ব্যবহার করা হয়েছে এই হামলায়।

এনডিটিভি বলছে, সাধারণত সেনাবাহিনীকে নিরাপত্তার জন্য বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সে দিন বিশালসংখ্যক জওয়ান একসঙ্গে যাচ্ছিলেন; যে কারণে বিমানের পরিবর্তে তাদের সড়ক পথে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। হামলার দু'দিন আগে থেকেই জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় জম্মু থেকে ওইদিন ভোর সাড়ে ৩টার দিকে কনভয় রওনা দেয়। ছুটি কাটিয়ে কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন জওয়ানরা এবং তাদের মোতায়েন করার আগে শ্রীনগরে রিপোর্টিং করার কথা ছিল।

সিআরপিএফ জওয়ানদের বাস চলাচলের জন্য ওইদিন সকালেই জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্ধ থাকলেও জাতীয় ওই সড়কে পৌঁছায় বোমারু আদিল। এনিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামলার পরই আদিল আহমেদ দারের একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। সেখানে সে বলেছে পুলওয়ামা হামলা করা হয়েছে মাসুদ আজহারের ভাইপোর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে। 


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর