২৪ মার্চ, ২০১৯ ১৬:২৯

সেই চালককে মরিয়া হয়ে খুঁজছেন মসজিদে হামলায় বেঁচে যাওয়া মাজদা

অনলাইন ডেস্ক

সেই চালককে মরিয়া হয়ে খুঁজছেন মসজিদে হামলায় বেঁচে যাওয়া মাজদা

গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের আল নূর মসজিদে বন্দুকধারী ব্রেনটন টেরেন্টের সেই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের পরও যে কয়েকজন মানুষ বেঁচে ফিরেছেন তাদের মধ্যে একজন মাজদা আল হাজি। সেদিন বাবা, স্বামী ও পুত্র সন্তানকে নিয়ে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন এই নারী। মসজিদে বন্দুকধারীর গুলিতে নিজের বাবা-বন্ধু ও প্রতিবেশীদের মৃত্যুর স্বচক্ষে দেখেছেন। এ সময় হামলাকারীর বন্দুকের গুলি এড়িয়ে কাঁধে ছোট্ট ছেলেকে তুলে নিয়ে কোনো রকমে মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন তিনি। ছেলেকে নিয়ে তিনি যখন দৌড় শুরু করেন, তখন বন্দুকধারী তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তবে তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন অজ্ঞাত এক নারী। যিনি ব্রেনটন টেরেন্টের বন্দুকের নলের সামনে থেকে তাদের গাড়িতে তুলে নিয়ে নিরাপদ স্থানে নামিয়ে দেন। ঘটনার দিন থেকে সেই অজ্ঞাত নারীকে মরিয়া হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন মাজদা হাজি।

রেডিও নিউজিল্যান্ডকে তিনি জানান, হামলার সময় অনেককে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখে ছেলেকে নিয়ে তিনি মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসার পর রাস্তায় একটি গাড়ি দেখতে পান। সেই গাড়ির চালকের আসনে নারী বিপদ আঁচ করতে পেরে গাড়ির দরজা খুলে দেন।

মাজদা হাজি বলেন, হামলাকারী আমাকে সামনে থেকে একটি এবং পেছন থেকে একটি গুলি ছুড়েছিল। আমি তাকে আমার পেছনে দেখেনি। তবে মানুষজন বলছিলেন যে, যখন তিনি দৌঁড়াচ্ছিলেন তখন হামলাকারীও তার পিছু নেয় এবং গুলিও ছোঁড়ে।

''একটি কার, যার চালক ছিলেন ৩০-৪০ বছরের ছোটখাট গড়নের এক নারী। কারটি নিয়ে তিনি রাস্তার পাশে ছিলেন। আমি সেই গাড়ির ভেতরে লাফ দিয়ে উঠে পড়ি।''

মাজদা হাজি আরও বলেন, ''আমি গাড়ির ভেতর উঠে বসে পড়ি এবং তিনি আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কী ঘটেছে? এমন সময়ও কিছু মানুষ ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল। সম্ভবত তাদের জানালা বন্ধ ছিল, যে কারণে বাইরে কী ঘটছে সেটা তারা দেখতে পায়নি।''

''আমার কথা শুনে ওই নারীও কাঁদতে শুরু করেন এবং গাড়ি থেকে নেমে তিনি মানুষদের থামতে বলেন।''

ওই নারীর পরিচয় না জানলেও মাজদা হাজি বলেন, সে সময় ওই নারী চালকের পরনে কালো পোশাক ছিল। পোশাকে একটি খাবারের কোম্পানির লোগো ছিল। পরে সড়কের অন্যপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা আরো দু’জন মুসলিম নারীকে নিয়ে তিনি দ্রুত সেখান থেকে সরিয়ে নেন। এবং কিছু দূর যাওয়ার পর একটি বাড়ির কাছে তাদের নামিয়ে দ্নে। পরে সেই বাড়ির ভেতরে তারা স্থান নেন। পরবর্তীতে মাজদা হাজি পুলিশের কাছে দারস্থ হন। তখন জানতে পারেন তার স্বামী বেঁচে আছেন। তবে ৬৬ বছরের বৃদ্ধ বাবা আর বেঁচে নেই। এরপর থেকে ওই নারী চালককে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য তিনি মরিয়া হয়ে খুঁজছেন। তিনি বলেন, তার সঙ্গে মিলিত হতে চাই এবং অন্তত একটি বারের জন্য হলেও তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।

বিডি-প্রতিদিন/২৪ মার্চ, ২০১৯/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর