৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৪:২৮

ভূমিকম্পের যে ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন বেঁচে যাওয়া তুর্কি তরুণী

অনলাইন ডেস্ক

ভূমিকম্পের যে ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন বেঁচে যাওয়া তুর্কি তরুণী

বিবিসির নিউজের স্ক্রিনশট

একের পর এক শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে তুরস্ক। এ ঘটনায় দেশটির ১০ নগরীতে ১৭শ’র বেশি ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটর ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায়।

শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের ঘটনায় তুরস্ক ও প্রতিবেশী সিরিয়ায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৫২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় তিন হাজার মানুষ।

জানা গেছে, স্থানীয় সময় সোমবার ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাস প্রদেশে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিগত একশ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে তুরস্কে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প এটি।

প্রথম শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার দুই ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৪২টি আফটারশক হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির অভ্যন্তরীণ দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।

তুর্কি ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে তার দেশে (রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) ২৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ২ হাজার ৩০০ জন।

এদিকে, এই ভূমিকম্পে সিরিয়ায় ২৩৭ জনের মৃত্যু ও ৬৩৯ জন আহত হয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে স্থানীয় বার্তা সংস্থা ‘সানা’।

ভয়াবহ এই ভূমিকম্পের বর্ণনা দিয়েছেন বেঁচে ফেরা এক তুর্কি তরুণী। তার নাম ওজগুল কনাকচি। 

তুরস্কের মালত্য শহরের বাসিন্দা ২৫ বছরের ওজগুল বলেন, চোখের সামনে ভবনের জানালাগুলো সশব্দে চূর্ণবিচূর্ণ হতে দেখেছেন।

ভূমিকম্পে অক্ষত আছেন ওজগুল। ভূমিকম্পের সময় তিনি ও তার ভাই ঘুমাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে বলি, ‘তুমি কি কাঁপছ?”

ওজগুল আরও বলেন, “আমি ল্যাম্পের (বাতি) দিকে তাকালাম। মনে হচ্ছিল ল্যাম্পটি ভেঙে যাচ্ছে। আমরা আমাদের তিন বছর বয়সী ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে লাফিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।”

তিনি বলেন, “আমাদের চোখের সামনে আফটার শকে একটি ভবনের জানালাগুলো ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়।”

ভূমিকম্পে ওজগুলদের ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের আশপাশের পাঁচটি ভবন ধসে গেছে। তিনি বলেন, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে এখন খুব ঠান্ডা রয়েছে। তুষারপাত হচ্ছে। এটা আরেক উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।

ওজগুল বলেন, সব লোক এখন রাস্তায় অবস্থান করছেন। তারা কী করবে, তা নিয়ে বিভ্রান্ত।

সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপের (ইউএসজিএস) তথ্যানুযায়ী, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৮ এবং এর উৎসস্থল ছিল দক্ষিণ তুরস্কের গাজিয়ানটেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ২৪.১ কিলোমিটার গভীরে।

তবে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে আঘাত হানা ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৪ এবং উৎপত্তিস্থল ছিল পাজারচিক জেলায়। এটি ঘটে ৭ কিলোমিটার গভীরে।

আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিয়ারবাকির ও গাজিয়ানটেপসহ অন্যান্য দক্ষিণ-পূর্ব প্রদেশ এবং লেবানন ও সিরিয়া, সাইপ্রাসসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতেও এই ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরে আফটারশকগুলো কয়েক ঘণ্টা এবং এমনকি কয়েক দিনও অব্যাহত থাকতে পারে। সূত্র: বিবিসি

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর