হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ড গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বাধা সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে সফরকালে হানিয়া নিহত হন।
ইরান ও তার মিত্ররা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে। তবে ইসরায়েল এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। হানিয়া হামাসের সর্বোচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন এবং কাতারে অবস্থান করে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির আলোচনায় গভীরভাবে জড়িত ছিলেন।
বাইডেন বলেছেন, আমরা যুদ্ধবিরতির জন্য ভিত্তি পেয়েছি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এখনই এ বিষয়ে এগিয়ে আসা উচিত। তাদেরও (হামাস) এখনই এটি মেনে নেওয়া উচিত।
ইসরায়েল ও হামাস সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য অনেকবার আলোচনায় বসেছে। তবে এই আলোচনায় অগ্রগতির বিষয়ে বিপরীতমুখী বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। মে মাসের শেষ দিকে বাইডেন ইসরায়েলি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের শর্তাবলী ঘোষণা করেন। এরপর থেকে কাতার, মিশর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে এটি অনিয়মিত আলোচনার ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েল ও হামাস একে অপরের বিরুদ্ধে আলোচনায় অগ্রগতিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে। হামাস বলেছে, ইসরায়েল নতুন শর্তাদি যোগ করেছে। আর নেতানিয়াহুর অফিস বলেছে, হামাস ২৯টি দাবি পরিবর্তন করেছে।
অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে গাজায় জিম্মি করে নিয়ে যায়। এই হামলার পর ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। গাজার হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কমপক্ষে ৩৯,৪৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রুজ এয়ার ফোর্স বেসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে প্রথম মন্তব্য করেন বাইডেন। তিনি বলেন, তিনি নেতানিয়াহুর সাথে কথা বলেছেন এবং ইরানের সকল হুমকির বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরান, হামাসের প্রধান সমর্থক এবং ইসরায়েলের প্রধান শত্রু।হানিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তেহরান প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
ইসরায়েল হানিয়া হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেনি। তবে নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল ইরানের প্রক্সি গ্রুপগুলোর ওপর ‘কঠোর আঘাত’ হেনেছে। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা মধ্যে হানিয়া হত্যাকাণ্ড ঘটে।
গত শনিবার ইসরায়েল অধিকৃত গোলান হাইটসে ফুটবল মাঠে এক হামলায় ১২ শিশু ও যুবক নিহত হয়। ইসরায়েল এর জন্য লেবাননের ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ আন্দোলনকে দোষারোপ করে এবং ‘গুরুতর’ প্রতিশোধের ঘোষণা দেয়। যদিও হিজবুল্লাহ জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
মঙ্গলবার হানিয়ার হত্যার কয়েক ঘণ্টা আগে, ইসরায়েল বৈরুতে হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার ফুয়াদ শুকরকে হত্যা করে। এই ফুয়াদ শুকর গোলান হাইটসে হামলার পেছনে দায়ী ছিল বলে ইসরায়েল দাবি করেছে। সূত্র : বিবিসি
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল