মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিস এক মাসের মধ্যেই চাঁদা তোলার ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি ইতিমধ্যেই ৪৫ কোটি ডলার সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন, যার একটি বড় অংশ এসেছে গত সপ্তাহে।
কমলা হ্যারিস বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনে তার প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে চাঁদা আসার পরিমাণ বেড়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে একাই ৮ কোটি ২০ লাখ ডলার সংগ্রহ করা হয়েছে, যা কমলা হ্যারিসের প্রার্থিতার প্রতি মানুষের আগ্রহের প্রতিফলন বলে মনে করছেন তার প্রচারণা ব্যবস্থাপক জেন ও’মেলি ডিলন। তিনি বলেছেন, “এই সময়ের মধ্যে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ এর আগে কোনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় সংগ্রহ করা হয়নি।”
কমলা হ্যারিসের প্রার্থিতা ঘোষণার পরপরই গণমাধ্যমে বিশেষ করে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা শুরু হয়। ট্রাম্প সম্প্রতি প্রচারণায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন। এখন কমলা হ্যারিসের বিপরীতে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন তিনি।
আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের আগে কমলা হ্যারিস এবং তার ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী টিম ওয়ালজ এই সপ্তাহে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে তাদের প্রচারণা চালাবেন। বাসে করে প্রচারণা চালানোর এই উদ্যোগটি, ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন বাড়ানোর জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই রাজ্যটি গত কয়েকটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবস্থায় ছিল, এবং এবারের নির্বাচনে তা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ডেমোক্র্যাটরা বিশ্বাস করে, জর্জিয়ায় জয়লাভ করলে তারা জাতীয় নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে পারবে।
হ্যারিসের প্রচারণা শিবির জর্জিয়ার বিভিন্ন অংশে সমাবেশ ও জনসংযোগ কার্যক্রমের আয়োজন করবে, যেখানে তারা স্থানীয় ইস্যু, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে কথা বলবেন। প্রচারণার সময় তারা বিশেষভাবে তরুণ ভোটারদের প্রতি মনোযোগ দেবেন, যাদের সমর্থন নির্বাচনের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
এছাড়া, হ্যারিস এবং তার ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী টিম ওয়ালজ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তারা তাদের নীতিগুলো তুলে ধরবেন এবং কেন এই নীতিগুলো দেশের বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর হতে পারে তা ব্যাখ্যা করবেন।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টি তাদের প্রচারণার একাংশে ট্রাম্প প্রশাসনের নানা ব্যর্থতার বিষয়টিও তুলে ধরবে। তারা বিশেষভাবে করোনা মহামারির সময় ট্রাম্পের পদক্ষেপের সমালোচনা করবেন এবং হ্যারিস-ওয়ালজ জুটির পরিকল্পনাকে সেই ব্যর্থতার প্রতিষেধক হিসেবে উপস্থাপন করবেন।
অন্যদিকে, হ্যারিসের প্রচারণার অর্থনৈতিক সাফল্য রিপাবলিকান শিবিরে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরকে এখন নতুন কৌশল গ্রহণ করতে হতে পারে, বিশেষ করে যেখানে অর্থ সংগ্রহ এবং সমর্থন বৃদ্ধির বিষয়টি রয়েছে।
শেষ পর্যন্ত, কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণার এই অভূতপূর্ব সাফল্য তাকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির একজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, যা নির্বাচনের দিন তার পক্ষে বড় ধরনের ফল বয়ে আনতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল