রাশিয়ার আদালত হাইপারসনিক অস্ত্রপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা পদার্থবিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার শিপলিউককে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। মঙ্গলবার মস্কোতে রুদ্ধদ্বার বিচারপ্রক্রিয়ায় এই রায় ঘোষণা করা হয়। সেখানে শিপলিউকের দলটির আরও সদস্যও আগে থেকেই বিচারের সম্মুখীন হয়েছেন।
আলেক্সান্ডার শিপলিউককে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ লাখ রুবল জরিমানা করা হয়েছে। তার মুক্তির পরেও অতিরিক্ত দেড় বছর তার চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হবে। শিপলিউক সাইবেরিয়ার নভোসিবিরস্ক শহরের খ্রিস্টিয়ানোভিচ ইনস্টিটিউট অব থিওরিটিক্যাল অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড মেকানিকসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে আনা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিপলিউকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি হাইপারসনিক অস্ত্রপ্রযুক্তির গোপন তথ্য বিদেশি কর্মকর্তাদের কাছে ফাঁস করেছেন। এই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে ১০ গুণ বেশি গতিতে আঘাত হানতে সক্ষম। ২০১৭ সালে চীনে অনুষ্ঠিত এক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে শিপলিউক এই গোপন তথ্য প্রকাশ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
শিপলিউক ২০২২ সাল থেকে মস্কোর কুখ্যাত লেফোরতোভো কারাগারে বন্দী আছেন। যদিও তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
রাশিয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিজ্ঞানীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বিচার হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিপলিউকসহ প্রায় ডজনখানেক বিজ্ঞানীকে এই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। গত মে মাসে শিপলিউকের সহকর্মী আনাতোলি মাসলভকেও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
রাশিয়া হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের দিক থেকে বিশ্বনেতৃত্বের দাবিদার এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। এই প্রেক্ষাপটে রাশিয়া বিজ্ঞানীদের ওপর চাপ তৈরি করে আসছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষভাবে তীব্র হয়ে উঠেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল