সিঙ্গাপুরের সাবেক পরিবহনমন্ত্রী এস. ইসওয়ারান দুর্নীতির অভিযোগে আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। মঙ্গলবার সিঙ্গাপুর সুপ্রিম কোর্টে তিনি পাঁচটি দুর্নীতিসংক্রান্ত অভিযোগ স্বীকার করেন। সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বের অন্যতম কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিত সিঙ্গাপুরে এমন বিচার প্রক্রিয়া খুবই বিরল। প্রায় চার দশকের মধ্যে এই প্রথম দেশটির কোনো মন্ত্রী দুর্নীতির অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হলেন।
গত জানুয়ারিতে পদত্যাগ করা ইসওয়ারানের বিরুদ্ধে ৩৫টি দুর্নীতিসংক্রান্ত অভিযোগ আনা হয়েছিল, যার মধ্যে হাজার হাজার ডলারের সমমূল্যের উপহারসামগ্রী গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্টে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর কৌঁসুলিরা ৩৫টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি লঘুতর অভিযোগ নিয়ে এগিয়ে যান। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে বিচার কাজে হস্তক্ষেপ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অনিয়মিত উপহার গ্রহণ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সিএনএ এবং দ্য স্ট্রেটস টাইমস জানিয়েছে, ইসওয়ারান পাঁচটি অভিযোগই স্বীকার করেছেন। তবে সাজা নির্ধারণের সময় আরও ৩০টি অভিযোগ বিবেচনায় নেওয়া হবে। বিচারকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ইসওয়ারানের সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা হতে পারে। আর উপহারসামগ্রী নেওয়ার অভিযোগে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের শাস্তি হতে পারে।
আজ সকালে সাদা এসইউভিতে করে আদালতে পৌঁছান ইসওয়ারান। আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি, শুধু ‘শুভ সকাল’ বলে সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া জানান। সকাল ১০টায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
আগামী বছরের নভেম্বরে সিঙ্গাপুরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর ইসওয়ারানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অভিযোগের পরপরই ইসওয়ারান দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।
সিঙ্গাপুরের ফৌজদারি আইনে সরকারি কর্মকর্তাদের উপহার গ্রহণের ওপর কড়া বিধিনিষেধ রয়েছে। এ আইনের আওতায়ই ইসওয়ারানের বিরুদ্ধে বেশির ভাগ অভিযোগ আনা হয়েছে। সাবেক মন্ত্রীর আইনজীবী দাবি করেছেন, ইসওয়ারান উপহারগুলো ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে গ্রহণ করেছেন, কারণ ওই ব্যবসায়ীরা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল