বিশ্লেষকদের মতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য কূটনীতির বর্তমান চিত্র অত্যন্ত জটিল এবং সংকটপূর্ণ। মার্কিন প্রশাসন, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন সরকার, গাজা ও লেবাননের হিজবুল্লাহসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাত নিরসনে অনেক চেষ্টা চালালেও কার্যত উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করতে পারেনি।
গাজায় চলমান সংঘাতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে একই সঙ্গে বেসামরিক মানুষের জীবন রক্ষায় চেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে, ইসরায়েলকে এ ব্যাপারে সংযত করতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ কার্যকর হয়নি। বিশেষ করে সম্প্রতি ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের ২১ দিনের অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সংঘাত আরও জোরদার করেছে, যা ইঙ্গিত করে যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব দিন দিন কমছে।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমে আসার অন্যতম কারণ হলো ইসরায়েল সরকার তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শকে উপেক্ষা করছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহ ও আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ার পরও ওয়াশিংটনের চাওয়া অনুযায়ী কাজ করতে নারাজ। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই পরিস্থিতি ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্য নীতির দুর্বলতা তুলে ধরছে।
গাজা যুদ্ধের পাশাপাশি ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের লোহিত সাগরে হামলাও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন উদ্বেগের কারণ। এদিকে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে সতর্ক করার জন্য মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানো হলেও, সেই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে।
এই সংকটগুলো সমাধানের ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের প্রচেষ্টার ব্যর্থ, বিশেষ করে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির প্রতি আস্থা আরও ক্ষুণ্ন করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান অস্থিরতা শুধু বাইডেন প্রশাসনের জন্য নয়, পরবর্তী মার্কিন সরকারের জন্যও এক বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল