ইসরায়েলের হামলায় গত শুক্রবার নিহত হন হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। এই হামলাকে ‘ন্যায়বিচারমূলক পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নাসরুল্লাহার মৃত্যুতে কয়েকটি দেশের সরকার, গোষ্ঠী ও রাজনীতিবিদেরা শোক প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, এ হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে অস্থিতিশীলতা আরও ছড়িয়ে পড়বে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, নাসরুল্লাহর হাতে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও লেবাননের হাজারো সাধারণ মানুষ মারা গেছে। হিজবুল্লাহ, হামাস, ইয়েমেনের হুতি এবং ইরানের সমর্থনপুষ্ট অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলা থেকে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। আর সেই অধিকারে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন থাকার কথাটি আবার জোর দিয়ে উল্লেখ করেন বাইডেন।
হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে নাসরুল্লাহর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানায়, তিনি সংগঠনের ‘অমর শহীদদের’ সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। হিজবুল্লাহ তাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং গাজার সমর্থনে ও লেবাননের প্রতিরক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকার কথা বলেছে।
ইসরায়েলের জেনারেল স্টাফের প্রধান হার্জি হালেভি বলেছেন, নাসরুল্লাহ ইসরায়েলের ধ্বংস কামনা করেছিলেন। কিন্তু ইসরায়েল তাকে মুছে দিয়েছে এবং দিন দিন আরও শক্তিশালী হচ্ছে। তার মৃত্যুকে ইসরায়েল একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখছে।
নাসরুল্লাহর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন লেবাননের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদরা। লেবাননের সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন বলেছেন, ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসন দেশের পরিস্থিতিকে আরও ভয়ংকর করে তুলছে এবং এ সময়ে জাতীয় সংহতি অত্যন্ত জরুরি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ আল হারিরি এক বিবৃতিতে বলেন, এই হত্যা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংঘাতের জন্ম দেবে, এবং তিনি এই কাপুরুষোচিত কাজের নিন্দা করেছেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নাসরুল্লাহর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে ইসরায়েলের এই হামলাকে ‘অপরাধমূলক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি সারা বিশ্বের মুসলিমদের লেবাননের জনগণ ও হিজবুল্লাহর পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এক বিবৃতিতে বলেছেন, নাসরুল্লাহর শাহাদাত প্রতিরোধকে আরও শক্তিশালী করবে।
ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠী এবং হামাসও নাসরুল্লাহর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। তারা নাসরুল্লাহকে একজন মহান নেতা হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং তাদের প্রতিরোধের দৃঢ়তা আরও বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান লেবাননে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, যদিও তিনি নাসরুল্লাহর নাম সরাসরি উল্লেখ করেননি। ফ্রান্সও এই ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা রোধে লেবাননের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে।
বিশ্বজুড়ে নাসরুল্লাহর মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগ বাড়ছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংঘাতের সম্ভাবনা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল