দীর্ঘ এক বছর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নৃশংস আগ্রাসন চালাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। তাদের বর্বরতায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪২ হাজার ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৯৭ হাজার ৭২০ জন। নিখোঁজ রয়েছে আরও বহু সংখ্যক মানুষ।
নৃশংসতা এখানেই থেমে থাকেনি। ইসরায়েলি বর্বরতায় ওই উপত্যকায় পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ৯০২টি পরিবার।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জেইন ছিলেন আল-নাজ্জার পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। তার পরিবার মধ্য গাজা উপত্যকার দেইর এল-বালাহতে বাস করত। আল-নাজ্জার পারিবারিক নামটি গাজায় খুবই সাধারণ এবং এর অর্থ রং মিস্ত্রি।
২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর তাদের বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচ শিশু ও তিন নারীসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্য নিহত হন। আহত হন ২৩ জন। ওই সময় জেইনের বয়স ছিল মাত্র দুই মাস।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংঘাত পর্যবেক্ষণ সংস্থা এয়ারওয়ারসের মতে, অন্তত তিনটি আল-নাজ্জার পরিবার ১০ বা তার বেশি সদস্যকে হারিয়েছে।
গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল গণহত্যা শুরু করার পর থেকে নিহত শতাধিক পরিবারের মধ্যে অন্তত ৩৯৩ জন আল-নাজ্জার ছিল।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গাজায় নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১৬ হাজার ৭৫৬ জন শিশু রয়েছে। হতাহতের প্রাপ্ত সংখ্যার বাইরে আরও হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ বা ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েছে।
১৫ সেপ্টেম্বর গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৩৪ হাজার ৩৪৪ জনের নাম, বয়স, লিঙ্গ এবং আইডি নম্বরের বিবরণ দিয়ে একটি বিস্তৃত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আরও হাজার হাজার লাশ শনাক্ত করা হচ্ছে।
গত এক বছরে গাজায় প্রতিদিন গড়ে ১১৫ জন নিহত হয়েছে। এই সংখ্যা গাজায় বসবাসকারী প্রতি ৫৫ জনের মধ্যে একজন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলের হামলা ৯০২টি পরিবারকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। গত এক বছরে এই পরিবারগুলোর প্রত্যেক সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। এর বাইরে কমপক্ষে ১ হাজার ৩৬৪টি ফিলিস্তিনি পরিবারে শুধুমাত্র একজন জীবিত সদস্য এবং তিন হাজার ৪৭২টি ফিলিস্তিনি পরিবারে মাত্র দু’জন জীবিত সদস্য রয়েছে। সূত্র: আল-জাজিরা, মুসলিম মিরর
বিডি প্রতিদিন/একেএ