সুদানের রাজধানী খার্তুমের একটি বাজারে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৪০ জনের বেশি।
গত শনিবার চালানো এই বিমান হামলায় দক্ষিণ খার্তুমে আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর অধিকৃত প্রধান ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
সেখানকার কেন্দ্রীয় বাজার এবং কাছাকাছি একটি আবাসিক এলাকায়ও সেসময় বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও স্থানীয় বাসিন্দারাও রয়েছেন।
স্বেচ্ছাসেবক উদ্ধারকারীদের একটি স্থানীয় সংস্থা জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
বাজারটি সুদানের রাজধানীর একটি প্রধান ক্যাম্পের কাছাকাছি, যেখানে আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে।
শুক্রবার থেকে খার্তুমের আশেপাশে ভয়ঙ্কর লড়াই শুরু হয়েছে। খার্তুমের বেশিরভাগ এলাকা আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে। সেনাবাহিনী শহরের কেন্দ্র এবং দক্ষিণে বিমান হামলা চালাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী নিকটবর্তী ওমদুরমান থেকে খার্তুমের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটি। আরএসএফ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে টানা ১৮ মাসের এই লড়াইয়ে ২০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। তবে অনেকের মতে, এ সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি হতে পারে। এছাড়াও জাতিসংঘ বলছে, সুদানের গৃহযুদ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুতি সংকটও তৈরি করেছে।
জাতিসংঘের ধারণা, চলমান সংঘাতে সুদানে ১ কোটিরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে- দেশটির জনসংখ্যার প্রায় এক পঞ্চমাংশ। যার মধ্যে ২ লাখ ৪০ লাখ সুদানি অন্যান্য দেশে পালিয়ে গেছে।
সেনাবাহিনীর প্রতি অনুগত সরকার লোহিত সাগর উপকূলে পোর্ট সুদানে অবস্থিত, যেখানে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে।
অন্যদিকে, আরএসএফ ইতোমধ্যে দারফুরের বিস্তীর্ণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, কৃষিরনির্ভর মধ্য সুদানে তাণ্ডব চালিয়েছে ও সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ঠেলে দিয়েছে।
এই সংঘাত আড়াই কোটিরও বেশি মানুষকে- সুদানের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যাকে খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার মরিয়া প্রয়োজনে ফেলেছে। গত আগস্টে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি মূল্যায়নে ঘোষণা করা হয়, দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশের শহরের কাছে জমজম শরণার্থীশিবিরে দুর্ভিক্ষ চলছে। সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/একেএ