বৃহস্পতির চাঁদে জল আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে মহাকাশযান পাঠালো মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সেখানে গুপ্ত সমুদ্র থাকার সম্ভাবনা আছে।
গতকাল সোমবার ফ্লোরিডা থেকে নাসার এই মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ হয়। স্পেসএক্সের ফ্যালকন রকেট বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপার দিকে পাড়ি দিয়েছে। সাড়ে পাঁচ বছর পর মহাকাশযান সেখানে পৌঁছাতে পারবে। এই অভিযানের নাম ইউরোপা ক্লিপার।
নাসা জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত সবকিছু ঠিক আছে।
এই অভিযান সফল হলে ইউরোপা সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়া যাবে। বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হতে পারবেন, সেখানে কোনো গুপ্ত সমুদ্র আছে কি না।
নাসার কর্মকর্তা জিনা ডিব্র্যাসিও জানিয়েছেন, ‘ইউরোপাতে প্রাণ আছে কিনা, সেটা দেখার জন্য অভিযান নয়, আমরা দেখতে চাইছি, ইউরোপা বাসযোগ্য হতে পারে কিনা। আমরা শক্তির উৎস দেখতে চাইছি, আমরা সেখানকার পরিবেশ বুঝতে চাইছি। আমরা দেখতে চাইছি, আমাদের বিশ্বের মতো ইউরোপা বাসযোগ্য কিনা।’
এই মিশনের খরচ ৫২০ কোটি ডলার। এই মিশন একসময় ভেস্তে যেতে বসেছিল। কারণ, বিজ্ঞানীদের মনে হয়, ক্লিপারের ট্রানজিস্টারগুলি বৃহস্পতির তীব্র বিকিরণ সহ্য করতে পারবে না। গত কয়েক মাস ধরে নাসার বিজ্ঞানীরা সবকিছু খতিয়ে দেখেছেন, প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করেছেন, তারপর তারা সিদ্ধান্তে এসেছেন, মিশন পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে হারিকেন মিলটন আছড়ে পড়ায় মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ বেশ কিছুদিন পিছিয়ে যায়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সোমবার মহাকাশযানকে নিয়ে রকেট ইউরোপার দিকে পাড়ি দেয়।
জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির ডিরেক্টর লরি লেশিন বলেছেন, ‘আমাদের কাছে একটা মহান দিন। আমরা খুবই উত্তজিত বোধ করছি।’
২০৩০ নাগাদ এই মহাকাশযান বৃহস্পতির কাছে পৌঁছবে। ২১ দিনে একবার তা বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করবে।
ইউরোপা ক্লিপার প্রোগ্রামের বিজ্ঞানী কার্ট নিইবুর বলেছেন, যদি বৃহস্পতির চাঁদে কোনো ধরনের জীবনের সন্ধান পাওয়া যায়, তাহলে ভাবুন তার অর্থ কী হবে।
তিনি বলেছেন, ইউরোপা যদি জীবন না থাকে, সেটা যদি বাসযোগ্য হয় তাহলেও নতুন দিগন্ত খুলে যাবে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে ও রয়টার্স
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত