মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

মৃত্যুফাঁদ ভূমধ্যসাগর

মৃত্যুফাঁদ ভূমধ্যসাগর

ভূমধ্যসাগর যেন মৃত্যুফাঁদ। সেখানে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবির ঘটনা যেন নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি সপ্তাহে ৭০০ অভিবাসী নিয়ে নৌকাডুবির পর আবারও গতকাল এই ঘটনা ঘটেছে। আর এসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে শত শত মানুষের। আর এই বিষয়টি নিয়ে লুঙ্মেবার্গে জরুরি বৈঠকে বসেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন নৌকাডুবির এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ সংকট মোকাবিলায় সংহতি এবং বোঝা ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। জাতিসংঘ বলছে, উত্তর আফ্রিকা-ইতালি রুটটি বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক পথ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বৈঠকের আগে ইইউর পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান ফ্রেদ্রেরিকা মোগহেরিনি বলেন, সমস্যার সহজ কোনো সমাধান নেই। তিনি বলেন, কাজের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু রাজনৈতিক ও নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। ভূমধ্যসাগর আমাদের। তাই ইউরোপীয়দের এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কারণ মানবাধিকার রক্ষার লক্ষ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূমধ্যসাগর এলাকা উন্নয়ন ও শান্তির পরিবর্তে নিরীহ মানুষের গোরস্থানে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যালেঙ্সি সিপরাস লিবিয়া থেকে ইতালিগামী ৭০০ অভিবাসী বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, নিজ দেশের নিরাপত্তাহীনতা ও যুদ্ধ থেকে পালানোর জন্য সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিনই সাধারণ মানুষের সলিল সমাধি ঘটছে এই সাগরে। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, এ দুঃখজনক ঘটনা রোধের জন্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও অভিবাসনের কারণ অনুসন্ধান করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভূমধ্যসাগরের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা-

২০ এপ্রিল, ২০১৫ : একটি জাহাজ ডুবে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

১৯ এপ্রিল, ২০১৫ : লিবীয় জলসীমায় একটি মাছ ধরার নৌযান ডুবে আনুমানিক ৭০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় মাত্র ২৮ জন জীবিত রয়েছে।

১২ এপ্রিল, ২০১৫ : লিবিয়া উপকূলের অদূরে জাহাজডুবির ঘটনায় ৪০০ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে। উদ্ধারকারীরা ১৪৫ যাত্রীকে উদ্ধার করেছে।

ফেব্রুয়ারি ২০১৫ : খারাপ আবহাওয়ায় পাচারকারীরা লিবিয়া থেকে যাত্রীবোঝাই রাবারের ডিঙ্গিতে যাত্রা শুরু করার নির্দেশ দেওয়ায় সেগুলো ডুবে গেলে পানিতে ডুবে ৩৩০ জন মারা যায়।

সেপ্টেম্বর ২০১৪ : অবৈধভাবে ইউরোপ পাড়ি দেওয়ার সময় মাল্টা উপকূলের অদূরে আনুমানিক ৫০০ অভিবাসী পানিতে ডুবে মারা যায়। পাচারকারীরা তাদের জোরপূর্বক একটি ছোট জাহাজে তোলার চেষ্টাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

অক্টোবর ২০১৩ : ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের অদূরে ৫০০ অভিবাসীবাহী একটি জাহাজে আগুন ধরে গেলে অন্তত ৩৬৬ জনের মৃত্যু হয়। ভয়াবহ এই ঘটনাটি বিশ্বব্যাপী খবরের প্রথম পাতায় স্থান পায়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পোপ ফ্রান্সিস স্থানটি পরিদর্শন করেন। বিবিসি, এএফপি।

 

সর্বশেষ খবর