শেষ পর্যন্ত ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে তিন আসামির ফাঁসি হচ্ছে না। তাদের যাবজ্জীবন সাজাই বহাল রেখেছে আদালত। এর আগে তিনজনের ফাঁসি চেয়ে আবেদন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে দেশটির শীর্ষ আদালত।
২০১৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সান্থান, মুরুগান এবং পেরারিভালানের মৃত্যুদণ্ড খারিজ করে যাবজ্জীবনের নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদনে কেন্দ্রের গড়িমসির কারণেই এই নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমপুদুরে একটি জনসভায় তামিল টাইগারদের আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। ১৯৯৯ সালে এই হত্যাকাণ্ডের চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগে এলটিটিই`র সদস্য শ্রীলঙ্কার নাগরিক মুরুগান ও সান্থন এবং তামিলনাড়ুর পেরারিভালানকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে সুপ্রিম কোর্ট। মুরুগানের স্ত্রী নলিনীকে প্রথমে চরম দণ্ড দেওয়া হলেও পরে তা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ের পরই সাংবিধানিক বিধি মেনে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানান ওই তিনজন।
২০১১ সালের ১২ অগাস্ট রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল সেই প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেন। এরপরই রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টে ফাঁসি রদের আর্জি জানান মুরুগান, সান্থন ও পেরারিভালান। কেন দীর্ঘ ১১ বছর তাঁদের আর্জি ফেলে রাখা হল- এই প্রশ্ন তুলে মুরুগানদের দাবি, সিদ্ধান্ত নিতে রাষ্ট্রপতির এই `অপরিমিত এবং অযৌক্তিক বিলম্ব` অসাংবিধানিক। ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর ধারায় স্বাধীনতা এবং জীবনের অধিকার সুরক্ষিত রাখার যে কথা বলা হয়েছে, প্রাণভিক্ষার আবেদনের সিদ্ধান্ত ১১ বছর ঝুলিয়ে রেখে রাষ্ট্রপতি তা লঙ্ঘন করেছেন বলেও দাবি করা হয় মাদ্রাজ হাইকোর্টে দায়ের করা মামলায়।প্রসঙ্গত, এর আগে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়েই বলা হয়, ফৌজদারি মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি সংবিধানে উল্লিখিত `জীবনের অধিকার ও স্বাধীনতার'ই অংশ।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৯ জুলাই, ২০১৫/ রোকেয়া।