দীর্ঘ টানাপড়েনের পর অবশেষে মুম্বাইয়ে বোমা হামলার অন্যতম আসামি ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি কার্যকর করেছে ভারত। গতকাল সকাল ৭টার দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর নাগপুরের কারাগারে ইয়াকুব মেমনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। এদিন ছিল তার ৫৪তম জন্মদিন। নির্ধারিত সময়ের কিছু আগেই সকাল সাড়ে ছয়টায় মহারাষ্ট্রের নাগপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। সকাল সাতটায় কারা চিকিৎসক মেমনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। এদিকে জেল সূত্রে খবর, ফাঁসির কারণে ভোর ৩টার সময় তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপর গোসল করিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। এরপর ধীরে ধীরে ফাঁসির মঞ্চের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ফাঁসির সময় কারাগারের নয়জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ফাঁসির আগে নামাজ এবং পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন মেমন। নিয়ম অনুযায়ী, ফাঁসি দেওয়ার ৩৫ মিনিট পর্যন্ত ঝুলিয়ে রেখে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। নাগপুর সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি দল তার ময়নাতদন্ত করেন। এরপরই লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিমানে করে লাশ মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথম দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেমনের লাশ আত্দীয়দের কাছে হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়। কারাগার চত্বরেই একটি স্থানে তাকে দাফন করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কিন্তু ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পর মেমনের ভাই সুলাইমান জেল কর্তৃপক্ষের কাছে লাশ হস্তান্তরের আবেদন জানান। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, তারা মেমনের শেষকৃত্য মুম্বাইয়ে করতে চান। সুলাইমানের আবেদন দ্রুততম সময়ে বিধি অনুযায়ী গৃহীত হয়। ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ের (তখন বোম্বে নামে পরিচিত ছিল) শেয়ারবাজার, একটি জনপ্রিয় সিনেমা হল ও দুটি মার্কেটে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়, যাতে অন্তত ২৫৭ জন নিহত হয় এবং ৭১৩ জন আহত হন। এর কয়েক মাস আগে ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় মুসলমানদের হত্যার প্রতিশোধ নিতেই ওই হামলা চালানো হয়। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ১৯৯৪ সালে পাকিস্তান থেকে ভারতে ফিরে আসেন ইয়াকুব। এর কয়েকদিন পরই তাকে আটক করা হয়। ইয়াকুবের দাবি, তিনি আত্দসমর্পণ করেন। আর পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে গ্রেফতারের কথা বলা হয়।