বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া

হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া

গোটা বিশ্ব থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। চলছে আন্তর্জাতিক নানা নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু এসব কঠোরতাকে থোড়াই কেয়ার করে পৃথিবীতে এ পর্যন্ত সৃষ্ট সবচেয়ে শক্তিশালী ও ভয়ঙ্কর বোমার পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া। আর এই বোমা হলো হাইড্রোজেন বোমা। যার জেরে সৃষ্টি হয় ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৫.১। হাইড্রোজেন বোমা এতটাই শক্তিশালী যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানে ফেলানো পারমাণবিক বোমার চেয়ে বহুগুণ শক্তিশালী। তবে এই পরীক্ষার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে গোটা বিশ্ব। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকালই জরুরি বৈঠকে বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে মিত্র দেশ চীন ও রাশিয়াও এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। চীন বলেছে তারা এ ধরনের পরীক্ষার ঘোরতর বিরোধী। জাপান বলেছে, তাদের নিরাপত্তার জন্য এটা চরম হুমকি। দক্ষিণ কোরিয়া বলেছে তাদের উসকানি দিতে পিয়ংইয়ং এ ঘটনা ঘটিয়েছে।  এদিকে উত্তর কোরিয়া ওই পরীক্ষা সফলভাবে করা হয়েছে বলে দেশটির জাতীয় টেলিভিশনে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর আগেও তিনবার ভূগর্ভে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল পিয়ংইয়ং। ২০০৬, ২০০৯ আর ২০১৩ সালে। এই পরীক্ষাগুলো চালানো হয়েছিল দেশটির পুংগাই-রি এলাকায় ভূগর্ভস্ত পরীক্ষাগারে। গতকালের পরীক্ষাটিও সেখানে করা হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন বোমা ফাটানোর নির্দেশটা দিয়েছিলেন খোদ উত্তর কোরিয়ার ‘নেতা ও প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন। গত ৩ জানুয়ারি তিনি ওই নির্দেশে সই করেন। আর দুই দিন পরেই প্রেসিডেন্ট কিম জং-উনের জন্মদিন। তার আগে এমন পরীক্ষায় ‘সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ায় তিনি খুশি’ বলে  সে দেশের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে। পরমাণু বোমা ও হাইড্রোজেন বোমার পার্থক্য : পরমাণু বোমায় পরমাণুর বিয়োজন ঘটানো হয়। আর হাইড্রোজেন বোমায় দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুকেজুড়ে দেওয়া হয়। আর ঘটানো হয় ‘চেন রিঅ্যাকশন’। সহজভাবে বলতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যে এটম বা পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয় তা ইউরেনিয়াম বা প্লুটোনিয়াম নিউক্লিয়াসে ফিশন প্রক্রিয়ায় ঘটানো বোম। কিন্তু ওই প্রক্রিয়া থেকে পুরো প্রক্রিয়ায় কাজ করে হাইড্রোজেন  বোমা বা থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা। এ বোমায় ভারী হাইড্রোজেনের আইসোটোপ ব্যবহার করা হয় এবং এতে ফিউশন প্রক্রিয়ায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। যে প্রক্রিয়ায় সূর্য তার শক্তি উত্পন্ন করে। তবে ফিউশন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য ট্রিগার হিসেবে একটি ফিশন বোমা বা এটম  বোমা ব্যবহার করা হয়। এ কারণে পারমাণবিক বোমা অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী হয়। এএফপি, বিবিসি।

সর্বশেষ খবর