শুক্রবার, ১৩ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাজনীতিতে পুত্রবধু মানেকাকেই পাশে চেয়েছিলেন ইন্দিরা

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

রাজনীতিতে পুত্রবধু মানেকাকেই পাশে চেয়েছিলেন ইন্দিরা

ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধীর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মানেকা গান্ধীকেই রাজনীতিতে চেয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। ইন্দিরা চেয়েছিলেন রাজনীতিতে তাকে সহায়তা করুক মানেকা। যদিও সোনিয়াকেই বেশি ভালোবাসতেন শাশুড়ি ইন্দিরা। কিন্তু সে সময় মানেকা এমন কিছু মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন যারা রাজীব গান্ধীর প্রচণ্ড বিরোধী ছিলেন। আর সে কারণেই ইন্দিরার থেকে দূরে সরে যেতে হয় মানেকাকে।

কোনার্ক পাবলিকেশনের তরফে সদ্য প্রকাশিত ‘দ্য আনসিন ইন্দিরা গান্ধী’ নামের একটি বইতে এমনটাই লিখেছেন ইন্দিরা গান্ধীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক কে. পি. মাথুর। ২০ বছর ধরে দেশটির একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন দিল্লির সফদরজঙ হাসপাতালের সাবেক ফিজিসিয়ান মাথুর। ১৯৮৪ সালে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীর গুলিতে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিদিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতেন তিনি। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক দিক এবং পরিবারের অন্যদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের খুটিনাটিই এই বইটিতে তুলে ধরেছেন মাথুর। সঞ্জয়ের মৃত্যুর কয়েক বছরের মধ্যেই মানেকা ইন্দিরা গান্ধীর বাসা ছাড়তে চেয়েছিলেন বলেও বইটিতে জানানো হয়েছে। তিনি জানান, সাধারণত বাসার গৃহস্থালির দিকটা দেখাশোনা করতেন সোনিয়াই। কিন্তু মানেকার রাজনৈতিক বিচক্ষণতার কারণেই তাকে কাছে টানতে চেয়েছিলেন ইন্দিরা। কিন্তু মানেকা প্রায়ই রাজীবের বিরোধী পক্ষের মানুষদের সঙ্গে মিশতেন। তাদের সঙ্গে নিয়েই ধীরে ধীরে ‘সঞ্জয় বিচার মঞ্চ’ তৈরি করেন মানেকা। তারা রাজীববিরোধী কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে শোনা যায়, যদিও ঠিক কী ধরনের কাজ করতেন তা আমি জানার চেষ্টা করিনি বলে দাবি মাথুরের। পরে সেই মঞ্চের তরফে লক্ষেৗতে একটি কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। সেই সভায় উপস্থিতির বিষয়ে ইন্দিরার বারণ ছিল। বিদেশে থাকাকালীনই ইন্দিরা গান্ধী বার্তা পাঠিয়ে ওই সভায় উপস্থিত না হতে নিষেধ করেছিলেন মানেকাকে। কিন্তু শাশুড়ির বারণ অমান্য করেই মানেকা সেই সভায় যোগ দেন। এতে শাশুড়ির বিরাগভাজন হন ছোট বউ মানেকা।

মাথুর জানান, রাজীবের সঙ্গে সোনিয়ার বিয়ের পরই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সোনিয়া পরস্পরের কাছাকাছি আসেন। ইন্দিরাকে যথেষ্ট সম্মান দিতে থাকেন সোনিয়া এবং খুব শিগগির গৃহস্থালির দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় সোনিয়াকে। রবিবারসহ অন্যান্য ছুটির দিনে বই বিশেষ করে প্রখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী পড়ে ইন্দিরা গান্ধী সময় কাটাতেন বলেও বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কখনো কখনো তাস খেলতেন। ১৯৬৬ সালে ভারতের প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম দুই বছর ইন্দিরাজি কতটা টেনশনে ছিলেন তাও তুলে ধরেন ১৫১ পৃষ্ঠার বইটিতে।

সর্বশেষ খবর