শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে

কাশ্মীর নিয়ে সম্পর্কের তলানিতে পৌঁছেছে ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক। ক্রমশই একে অপরের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে। এবার পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর দখলমুক্ত করার ইসলামাবাদকে চিঠি লিখল নয়াদিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে পাকিস্তানকে জানিয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর থেকে খুব শিগগির পাকিস্তান যেন সরে যায়। পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার শর্ত হিসেবে ভারতের তরফে বলে দেওয়া হয়েছে ভারতশাসিত কাশ্মীর বা মুম্বাইতে পাকিস্তানের তরফে যে সন্ত্রাস রপ্তানি করা হচ্ছে তা বন্ধ করলেই তাদের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। গত মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর ওই চিঠি পাঠিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আজিজ আহমেদ চৌধুরীকে। ওই চিঠির মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে সীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ, জঙ্গি শিবিরগুলোকে নির্মূল করা, ২৬/১১ মুম্বাই হামলার দোষীদের শাস্তির দাবি করা হয়।

কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব ভারতশাসিত কাশ্মীর নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে আমন্ত্রণ জানায়। তার জবাবেই ভারতের তরফেও ইসলামাবাদকে পাল্টা চিঠি দেওয়া হলো। এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সরতাজ আজিজের মৌখিক কাশ্মীর-বৈঠকের আহ্বানে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বলেছিলেন কাশ্মীর নয়, একমাত্র সীমান্ত সন্ত্রাস নিয়েই পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। তবে ভারতের পাঠানো চিঠির বিষয়টি সামনে আসে বৃহস্পতিবার। গত ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের বালুচিস্তান ও গিলগিট নিয়ে কথা বলার পরই পাকিস্তানের তরফে একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছিল মোদি ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করেছে। এরপরই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব চিঠির বিষয়টি সামনে আনেন।

পাকিস্তানের তরফে মোদিকে উদ্দেশ করে যে ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করার কথা বলা হয়েছে সে বিষয়েও ভারতের তরফে কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, “যারা ‘রেড লাইন’ পার করার কথা বলছে তারা নিজেরাই সে বিষয়টি জানে কি না সন্দেহ আছে। সীমান্ত সন্ত্রাস এবং অনুপ্রবেশ নিয়ে পাকিস্তানের ভূমিকাই এ অঞ্চলে সব সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু। আর এটা শুধু ভারতের ধারণা নয়, আপনারা অন্য রাষ্ট্রগুলোকেও এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।” জয়শঙ্কর আরও জানান, ‘বেলুচিস্তানের উন্নয়ন নিয়ে বেশকিছু দিন ধরে ভারত যথেষ্ট উদ্বিগ্ন এবং দেশের সরকারি কর্মকর্তারাও এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।’ সব মিলিয়ে দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক ঠান্ডা লড়াইয়ের পারদ দিনের পর দিন চড়ছে।

গত ১২ আগস্ট কাশ্মীর নিয়ে নয়াদিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠকেই বেলুচিস্তান ভারতের অংশ বলে দাবি করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। এরপর লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান থেকেও বেলুচিস্তানের নাগরিকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে বেলুচিস্তান, গিলগিট এবং পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের এমন বহু মানুষ তাদের ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা আমাকে জানিয়েছেন।’ বে বিষয় নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে আলোচনার দাবি জানানো হয়েছে তাতে পাকিস্তানকে কিছুটা বিপাকে ফেলা গেছে বলেই মনে করছে নয়াদিল্লি।

সর্বশেষ খবর