মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভীতু নন সাংবাদিক আলমিদা

ভীতু নন সাংবাদিক আলমিদা

পাকিস্তানে সেনাবাহিনী সব সময় শক্তিশালী। সরকার থেকে শুরু করে কোনো প্রতিষ্ঠানেই সেনাবাহিনীকে কখনো ঘাঁটাতে চায় না। ভারতের সঙ্গে দেশটির বর্তমানে যাচ্ছেতাই সম্পর্ক যাচ্ছে। এরমধ্যে দেশটির প্রভাবশালী পত্রিকা ডন সরকার ও সেনাবাহিনীর ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’ নিয়ে খবর ফাঁস করে। সংবাদটি করেছিলেন পত্রিকার সাংবাদিক সাইরিল আলমিদা। কিন্তু এটি প্রকাশ হওয়ার পর সরকারের তোপের মুখে পড়েছেন আলমিদা। তার খবর ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে। তার বিদেশ ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তবে নিজেদের প্রকাশিত খবর নিয়ে অটল অবস্থানে রয়েছে ডন পত্রিকা ও সাংবাদিক আলমিদা। তাদের ভাষ্য, সব ধরনের যাচাই বাছাই করে বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক খবর দিয়েছে। আর এ জন্য অনুতপ্ত ও ভীতু নন বলে জানিয়েছেন আলমিদা। সপ্তাহজুড়েই আলোচনা-সমালোচনা পোহাতে হয়েছে সাংবাদিক আলমিদাকে। এ অভিজ্ঞতার কথাই ‘আ উইক টু রিমেমবার’ (মনে রাখার মতো একটি সপ্তাহ) শীর্ষক নিবন্ধে তুলে ধরেছেন আলমিদা। রবিবার ডন পত্রিকায় তার নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে। নিবন্ধের শুরুতেই আলমিদা বলেছেন, অনেকের অনুরোধে এই এক সপ্তাহের অভিজ্ঞতা লিখতে বসেছেন তিনি। আলমিদা ৬ অক্টোবরের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেদিন সকালে যখন ‘অন্তর্দ্বন্দ্বের গোপন খবরটি’ প্রকাশ করা হয়, তখন এর কোনো অংশ নিয়ে তার অথবা ডন পত্রিকার কোনো সংশয় ছিল না। পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বৈঠকটি হয়েছিল ৩ অক্টোবর। এরপরেই ডন প্রতিবেদনটি প্রকাশ করতে পারত। কারণ, আলমিদার কাছে সে সময় সব তথ্যই ছিল। কিন্তু প্রতিটি তথ্য বারবার যাচাই করা, সূত্র যাচাই করা ও সুনির্দিষ্ট বক্তব্য নেওয়ার জন্য তারা আরও সময় নিয়েছিলেন। আর একেবারে নিশ্চিত হয়েই খবরটি প্রকাশ করেছিলেন। আলমিদা লেখেন তার এবং তার পত্রিকার জন্য কেবল দুটি প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথম প্রশ্ন, বৈঠকটি হয়েছে কি না? আর দ্বিতীয় প্রশ্ন, বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু সব মাধ্যম থেকে যাচাই করা হয়েছে কি না? আলমিদা বলেন, সরকারের বিপক্ষে গিয়ে এ ধরনের কিছু করতে গেলে প্রথমে কিছুটা ভয় হয়। অনেক সময় নিজের বিপদের আশঙ্কাও থাকে। কিন্তু পরিস্থিতি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ ও তথ্য ঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করতে পারলে ভয় কমে যায়। আলমিদা আরও বলেন, ‘এ খবরটি লেখার সময় আমি সতর্ক ছিলাম। জানতাম, এর প্রতিক্রিয়া হবে বোমা ফেলার মতো। ডন পত্রিকার দুজন সম্পাদকের সঙ্গে আমি কাজ করেছি। তাদের কাছ থেকে শিখেছি সাহসের সঙ্গে কাজ করার।’ এ প্রসঙ্গে সম্পাদকদের একজন আব্বাস নাসিরের কথা উল্লেখ করেন আলমিদা। নাসির তাকে বলেছিলেন, ‘মনে রাখবে তুমি যা করছ তা-ই থেকে যাবে। সমালোচকেরা হারিয়ে যাবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর